‘এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই’
৩১ আগস্ট ২০১৯ ১৯:৩২
ঢাকা: আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এতে আমাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন শনিবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকর্মীদের এই তথ্য জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা সফরে এসেছিলেন। তখন তার সঙ্গে আমার এই বিষয়ে আলাপ হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে জানিয়েছেন বিষয়টি একান্তই তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এই বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’
‘ভারতের মন্ত্রী আমাকে আরও বলেছেন, তাদের কখনোই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে না’, যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন।
তিনি আরও বলেন, ‘দেখেন ভোল্টেজ ডাইনামিক পৃথিবীতে বিভিন্ন ঘটনা ঘটবে, অ্যান্ড উই উইল ম্যানেজ ইট। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। আমাদের এইখানে এখন বেকার সমস্যা নেই, আমাদের দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। যদি গিয়ে থাকে তবে সেটা বহু আগে ৭১ সাল বা ৪৭ সালের আগে।’
প্রসঙ্গত, শনিবার আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ আবেদনকারীর মধ্যে তালিকায় স্থান পেয়েছেন ৩ কোটি ১১ লাখ নাগরিক। অর্থাৎ প্রায় ১৯ লাখ বসবাসকারী চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। তারা আগামী ১২০ দিনের মধ্যে আপিলের সুযোগ পাবেন। তালিকায় নাম না থাকা আসামে বসবাসরতদের জন্য এখন কি ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে উৎকণ্ঠা। তবে আসামের পুলিশ বিবৃতিতে সবাইকে অনুরোধ করেছে যেকোনো ধরনের সহিংসতা ও গুজব থেকে দূরে থাকার জন্য। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
পুলিশ জানিয়েছে, চূড়ান্ত তালিকায় স্থান না পেলেও এখনই কেউ অবৈধ বিদেশি বলে বিবেচিত হবেন না। ফরেনার্স ট্র্যাইবুনালে তারা ১২০ দিনের মধ্যে আপিলের সুযোগ পাবেন। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের আইনি সহায়তা দেওয়া হবে। বিভিন্ন জায়গায় ফরেনার্স ট্র্যাইবুনাল গঠনের কাজ চলছে। এসব ট্র্যাইবুনাল যেকোনো মামলা ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করবেন। এরপরও সুযোগ থাকছে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের। আইনিপ্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হবে না।
ইতোমধ্যে আসামে ১০ হাজার আধাসামরিক বাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উত্তেজনাপ্রবণ বেশ কিছু জেলায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। এদিকে, তালিকায় নাম না আসায় এক নারীর আত্মহত্যার খবরও পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, আসামে অবৈধ বসবাসকারীদের চিহ্নিত করতে নাগরিক বিল প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৫১ সালে। এরপর বিভিন্ন সময়ে এই তালিকা সংশোধন করা হয়। ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পর থেকে যে সমস্ত ‘বাংলাদেশি’ নাগরিক বেআইনিভাবে ভারতে এসে বসবাস করছেন তাদের তালিকা সংশোধনের জন্য নির্দেশ দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। তবে যে সমস্ত বসবাসকারী ভারতের নাগরিক বলে বিবেচিত হবেন না তাদের কপালে কি ঘটবে তা অনিশ্চিত। বিভিন্ন সংগঠন এ সমস্যা নিরসনে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে।