রিফাত হত্যা: মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৯:১৭
ঢাকা: বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। এতে মিন্নিকে সাত নম্বর আসামি করা হয়েছে।
এই মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন সারাবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিন বিকেলে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির অভিযোগপত্র জমা দেন।
পুলিশ জানায়, গভীর তদন্ত শেষে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪/২১২/১০৯/১১৪/১২০-বি(১) ধারায় বরগুনা সদর থানা পুলিশ ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র ২৮০(১) আদালতে জমা দিয়েছে। বয়সের ভিত্তিতে দু’টি আলাদা অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১০ জন ও শিশু আদালতে ১৪ জনসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগপত্রে নতুন পাঁচ মুখ
পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, অভিযোগপত্রে এজাহারভুক্ত ও জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার ছাড়াও নতুন করে পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। একটিতে ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে যাদের বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি। এরা হলেন— মো. রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, মো. রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, মোহাম্মদ মুছা, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর ও কামরুল হাসান সায়মুন। এদের মধ্যে মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত পলাতক।
অভিযোগপত্রে যেসব শিশুর নাম এসেছে— রাশিদুল হাসান রিশান ওরফে রিশান ফরাজী, রাকিবুল হাসান রিফাত হাওলাদার, আবু আবদুল্লাহ ওরফে রায়হান, মো. ওলিউল্লাহ ওরফে ওলি, জয় চন্দ্র সরকার ওরফে চন্দন, মো. নাইম, তানভীর হোসেন, নাজমুল হাসান, মো. রাকিবুল হাসান নিয়ামত, সাইয়েদ মারুফ বিল্লাহ ওরফে মোহিবুল্লাহ, মারুফ মল্লিক, প্রিন্স মোল্লা, রাতুল সিকদার জয় ও আরিয়ান হোসেন শ্রাবণ।
নতুন পাঁচ আসামি হলো— সাইয়েদ মারুফ বিল্লাহ ওরফে মোহিবুল্লাহ, মো. রাকিবুল হাসান নিয়ামত, প্রিন্স মোল্লা, মারুফ মল্লিক ও মো. নাইম।
গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন বন্ডের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ ফাঁস হলে রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তোলে।
ওই মামলায় প্রথমে মিন্নিকে সাক্ষী হিসেবে দেখানো হলেও, পরে এক আসামির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আসামি হিসেবে গ্রেফতার করা হয়।