সারাবাংলা ডেস্ক
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, জিয়ার আরফানেজ ট্রাস্ট দূর্নীতি মামলায় আজ বৃহস্পতিবার ৫ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। রায়ের পর আদালতের বিধান মেনে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দলটির চেয়ারপারসন ও দুই বারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দূর্নীতির কারাদণ্ড পাওয়ার ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম ডনও বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করে। তবে ভুল তথ্য ও সংবাদে অযাচিত মন্তব্যসহ ‘একপেশে’ খবর প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি।
খালেদার সাজার খবরে ডনের শিরোনাম, বাংলাদেশের আদালত বিরোধীদল নেতা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। অথচ ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশই নেয়নি বিএনপি। আর বর্তমান সংসদে বিরোধীদলনেতার নাম রওশন এরশাদ।
একপেশে এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় এমন কিছু তথ্য যা খালেদা জিয়ার পক্ষেই সাফাইয়ের সামিল। আবার এমন সব তথ্য এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে যা বিএনপির বিরুদ্ধে যায়। যেমন, বিপুল নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে ডনের প্রতিবেদনে। এদিকে সময় টিভির বরাত দিয়ে সংঘর্ষে দুইটি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার খবর প্রকাশ করা হলেও এ ঘটনা যে খালেদা জিয়ার সমর্থকরা করেছেন তা এড়িয়ে যাওয়া হয়।
প্রতিবেদনটিতে ‘অবাধ গ্রেফতার’ নামে একটি আলাদা প্যারা দেওয়া হয়েছে। সেখানে এই রায়কে আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচন থেকে খালেদাকে দূরে রাখার কৌশল বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
এছাড়া খালেদার বিরুদ্ধে অভিযোগ রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, এবং এ রায় জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে বাদ দেওয়ার উদ্দেশ্যে একথাও প্রতিবেনে উল্লেখ করা হয়েছে। এর পক্ষ বেগম জিয়া ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য উদ্ধৃত করা হয়।
এমনকি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়ার ডিরেক্টর ব্রাড অ্যাডামসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার যেন বিনা বিচারে গ্রেফতার বন্ধ করে। অ্যাডামস আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার দাবী করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় তারা উদার তবে এই সিদ্ধান্তে তাদের রাজনৈতিক বিরোধিতা বের হয়ে আসে।
প্রতিবেদনে প্রথম আলোর শিরোনাম উদ্ধৃত করে পরোক্ষভাবে দাবি করা হয়, বাংলাদেশের গ্রাম্য অঞ্চলে বিএনপি এবং জামাত জোট বেশ জনপ্রিয় তাই সরকার তাদের সমর্থকদের ঢাকায় আসতে বাধা দিচ্ছে।
প্রতিবেদনে বার বার খালেদা জিয়ার বক্তব্য আনা হয়েছে। তার এবং তার পুত্র তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা সকল মামলাকে অভিযোগ বলে উল্লেখ করা হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া ডিরেক্টর এও বলেন যে, “সহিংসতা রোধ করা সরকারের দায়িত্ব, কিন্তু এটি এমনভাবে করা উচিত যা মৌলিক অধিকারগুলোর সম্মান করে”
তবে প্রতিবেদনের কোথাও সরকারের বা পুলিশ প্রশাসনের কোনো বক্তব্য আনা হয়নি। মামলার বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কোনো কৌসুলির কোনো যুক্তি উপস্থাপন করা হয়নি। পুরো প্রতিবেদন জুড়েই রয়েছে খালেদার প্রতি পক্ষপাতের ভাষা।
সারাবাংলা/এমএ/এসবি