Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মামলার নামে নিরীহ যুবককে হয়রানি, ২ পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার


২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২০:৩৯

ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে নিরীহ এক যুবককে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার নামে হয়রানি করার অভিযোগে পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এরা হলেন মোহাম্মদপুর থানার সহকারী উপপরিদর্শক জাকারিয়া, সহকারী পরিদর্শক আলমগীর হোসেন।

ভুক্তভোগী মোটর মিস্ত্রীর নাম মো. কামাল হোসেন। রাজধানীর শ্যামলীতে তার মোটর সাইকেল মেরামতের গ্যারেজ রয়েছে।

তেজগাঁও ডিভিশনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ওহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে জানান, আসামি হিসেবে ভুল ব্যক্তিকে আটক এব্ং হয়রানির অভিযোগে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশের ডিসি অফিসে ক্লোজড করা হয়েছে। ঘটনার পূর্ণ তদন্ত চলছে। দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শুধু আসামির বাবার নামের সঙ্গে মিল থাকার অজুহাতে ২০০৯ সালের একটি মাদক মামলায় চার্জশিটভুক্ত পলাক আসামি মনিরের পরিবর্তে আসামি হিসেবে দ্রুতই কারাগারে যেতে হচ্ছিল নির্দোষ মোটর সাইকেল মেকানিক মো. কামাল হোসেনকে।

কামালের বাবার নাম মনির হোসেন। মায়ের নাম কামরুন নাহার। তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর: ৫০৮১৮৩০৫৮৯। তার জন্ম তারিখ ১৯৮৭ সালের ২৬ নভেম্বর। অথচ আসল আসামি মনিরের জন্ম ১৯৮২ সালে।

নিরীহ কামাল পেশায় একজন মোটরবাইক মেকানিকস। মোহাম্মদপুর থানার শ্যামলীর রিং রোডে তার নিজের একটি মোটরসাইকেল গ্যারেজ রয়েছে। গত ৩০ আগস্ট বিকেলে মোহাম্মদপুর থানার শ্যামলী রিং রোডের বাদশাহ ফয়সাল ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গলিতে চেকিংয়ের সময় মো. কামালকে আটক করেন এএসআই জাকারিয়া। চেকিংয়ের সময় ভোটার আইডি দেখালে ওই কর্মকর্তা তাকে জানায় তার নামে থানায় ২০০৯ সালের একটি মাদক মামলা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এএসআই জাকারিয়ার মোবাইলে তাকে এ সংক্রান্ত মামলার আসামির বিরুদ্ধে কথিত গ্রেফতারি পরোয়ানার একটি ছবিও দেখিয়ে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যান। থানায় যাচাই বাছাইকালে পুলিশ সদস্যরা জানতে পারেন, যার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে সেই ব্যক্তি গ্রেফতার হওয়া এই কামাল হোসেন না। তার নিজের নাম ও বাবার নাম মিল থাকলেও ওয়ারেন্ট ইস্যুকৃত ব্যক্তির মায়ের নাম, জন্ম সাল, এলাকার ঠিকানা ও পেশার কোনো মিল নেই।

শুধু তাই নয় নিরীহ কামালের নামে কোনো মামলা নেই। এমনকি কোনো থানায় জিডির ঘটনাও ঘটেনি। আসল আসামির সঙ্গে তার শুধু তার বাবার নামের মিল রয়েছে। অন্যদিকে নিরীহ ব্যক্তির নাম মো. কামাল হোসেন।

আসামির সঙ্গে তার আর অন্য কোনো মিল নেই। এর আগে আসল আসামি গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাকে রিমান্ডেও আনা হয়েছিল। বিভিন্ন তথ্য যাচাই-বাছাইকালে অফিসার ইনচার্জের অনুমতি সাপেক্ষে ওইদিনই মো. কামাল হোসেনকে তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

কিন্তু, আরেকজন এএসআই আলমগীর, থানায় যিনি এসআই জাকারিয়ার বন্ধু বলে নিজের পরিচয় দিয়ে বিভিন্নভাবে ঘুষ দাবি করেন।

এএসআই আলমগীর রোববার (১ সেপ্টেম্বর) নিরীহ কামালের দোকানে এসে তাকে আবার খুঁজেও যান। এরপর তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কামালকে আশ্বাস দেন, মামলার ভোগান্তি থেকে অব্যাহতি পেতে চাইলে তাকে কিছু খরচ দিয়ে ‘খুশি’ করতে হবে। কোর্ট থেকে মামলায় থাকা তার নামও খারিজ করে দেওয়ার কথা বলেন। তা না হলে ভোগান্তিসহ তাকে জেল-জরিমানার ভয়ভীতি দেখান তিনি।

পরে বিষয়টি ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার (ক্রাইম) শেখ নাজমুল আলমকে জানালে তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে যেন নিরীহ ব্যক্তি বিন্দুমাত্র হয়রানির শিকার না হন।’

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে তিনি বিষয়টি তেজগাঁও ডিভিশনের ডিসি আনিসুর রহমানকে জানালে পুলিশের ডিসি সঙ্গে সঙ্গে তদন্তের নির্দেশ দেন। বিকেলে ডিসির নির্দেশে নিরীহ কামালকে ডিসি অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে অভিযুক্ত দুই পুলিশ অফিসারকেও নিয়ে আসা হয়।

ডিসির পক্ষে এডিসি ওহিদুল ইসলাম অভিযুক্ত দুই পুলিশ অফিসার এবং ভুক্তভোগী কামালের জবানবন্দি নেন। প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়।

সারাবাংলা/ইউজে/একে

টপ নিউজ পুলিশ পুলিশ প্রত্যাহার মোহাম্মদপুর থানা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

চট্টগ্রামে খালে ভাসছিল অর্ধগলিত লাশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৩

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

সম্পর্কিত খবর