Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাবি রোকেয়া হলে ২১ লাখ টাকা নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ


৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৯:০৬

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া হলে হল প্রাধ্যক্ষের মদতে হল সংসদ ও হল ছাত্রলীগের নেতাদের বিরুদ্ধে ২১ লাখ টাকা নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ এনেছেন হলের কিছু আবাসিক শিক্ষার্থী।

তাদের অভিযোগ, হলের অফিস সহায়ক, মালী ও প্রহরী পদে নিয়োগে ২১ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) ইসরাত জাহান তন্বী, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সায়মা আক্তার প্রমি এবং রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বিএম লিপি আখতার ও সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী দিশা এসব টাকা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জিনাত হুদা এই নিয়োগ বাণিজ্য সম্পর্কে অবহিত এবং তিনিও এই নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত বলেও অভিযোগ করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা হলেন— রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শ্রবণা শফিক দীপ্তি, সায়েদা আফরিন শাফি ও জয়ন্তী রেজা।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, হলের কর্মচারী কামাল উদ্দিনের ছেলে কামরুজ্জামানকে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য আট লাখ টাকা নিয়েছেন হল সংসদের ভিপি ইসরাত জাহান তন্বী। অন্যদিকে হলের মালী বাবুল চৌহানের ছেলে পলাশ চৌহানকে বাগান মালী পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন হল সংসদের জিএস সায়মা আক্তার প্রমি। আর আলমগীর নামের একজনকে প্রহরী পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য আট লাখ টাকা নিয়েছেন রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ডাকসুর কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক বিএম লিপি আখতার এবং সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী দিশা।

হল সংসদের এজিএস ফাল্গুনী তন্বী কোনো ভাগ না পাওয়ায় তার মাধ্যমেই এই তথ্য ফাঁস হয়েছে দাবি করেন অভিযোগকারীরা। হলের এক কর্মচারী ও এজিএস ফাল্গুনীর মধ্যেকার এ বিষয়ক কয়েকটি অডিও কল রেকর্ডের ক্লিপস অভিযোগকারীদের কাছে রয়েছে। এসব অডিও ক্লিপের মধ্যে টাকা লেনদেনের প্রমাণ রয়েছে বলেও দাবি করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত ৩১ আগস্ট শ্রবণা শফিক দীপ্তি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে হলের নিয়োগে লেনদেন বাণিজ্যের অভিযোগ এনে একটি পোস্ট করেন। ওই পোস্টটি আলোড়ন তৈরি করে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে হল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, গত সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) অভিযোগকারী দীপ্তিকে নোটিশ পাঠিয়ে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হল প্রাধ্যক্ষ অফিসে উপস্থিত হয়ে তার বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

দীপ্তির অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরে বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ডেকে নিয়ে অভিযুক্তরা তাকে হেনস্তা করেন এবং এর ভিডিও ধারণ করেন। অভিযুক্তরা দীপ্তিকে বিভিন্ন কটূ কথা বলে মৌখিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং বিভিন্ন হুমকি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে, তদন্তে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ প্রমাণিত হলে হল সংসদ বাতিল করার দাবি জানান তিনি। এছাড়া, হল সংসদের ভিপি-জিএসসহ অভিযুক্ত এবং হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিও জানান শ্রবণা শফিক দীপ্তি।

অভিযোগের বিষয়ে হল সংসদের ভিপি-জিএসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা অভিযোগ অস্বীকার করেন।

অভিযোগের বিষয়ে ডাকসুর ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক ও রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি  বিএম লিপি আখতার বলেন, ‘দীপ্তি সবসময় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কথা বলে, এটা সবাই জানে। সে আমার বিরুদ্ধে, আমার হলের সেক্রেটারির, হল সংসদের ভিপি-জিএসের বিরুদ্ধে এবং প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিল। এজন্য আজকে মিটিং ডেকে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। সে বলেছে, চতুর্থ শ্রেণির একজন কর্মচারী তাকে এ বিষয়ে তথ্য দিয়েছে। কোন কর্মচারী নাম জানতে চাইলে সে নাম বলেনি।’ অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিতের জন্য দীপ্তিকে প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে বলে জানান লিপি।

অভিযোগের বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, আজ তদন্ত কমিটি ডেকেছিলাম। যারা অভিযুক্ত, সবাইকে ডেকেছিলাম। তাদের ইন্টারভিউ করেছি। একইভাবে যে অভিযোগ এনেছে, তাকেও ডেকেছি।  ক্রস চেকিং হয়, এটিই নিয়ম। কিন্তু অভিযোগকারী কোনো সোর্স বলেনি। সে বলেছে, এটা তার বক্তব্য না, আরেকজন দিয়েছে। কিন্তু তদন্ত কমিটিতে সোর্স বলতে হবে।

২১ লাখ টাকা নিয়োগ বাণিজ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ বাণিজ্য রোকেয়া হল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর