Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গবেষণা ও কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে


৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২০:৪৪

ঢাকা: ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সারাবছর গবেষণা ও কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মমিনুর রহমান মামুন।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) উদ্যোগে আয়োজিত ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদ্ধতি নির্ধারণে গবেষণার গুরুত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পবার সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুস সোবহান।

বিজ্ঞাপন

মমিনুর রহমান মামুন বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বছরব্যাপী আমাদের গবেষণা ও কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা সিটি করপোরেশন নিজেদের দায় স্বীকার করছি। কিন্তু আমরা এখন বছরব্যাপী সমন্বিত মশক নিধন কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। ’

মামুন আরও বলেন, ‘আমরা মশা মারতে গিয়ে কোনোভাবেই পরিবেশের ক্ষতি করতে চাই না। তবে আমরা যেসব কীটনাশক ব্যবহার করছি বা অন্যান্য যেসব নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হচ্ছে, তা পরিবেশের ক্ষেত্রে কী প্রভাব ফেলছে তা আমাদের গবেষণা করতে হবে।’

তিনি জানান, মেট্রোরেল, বৃহৎ স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন, চিড়িয়াখানাসহ মানুষের বাসাবাড়িতেও এডিস মশা পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে ব্রিগেডিয়ার মামুন বলেন, ‘সব জায়গা মশামুক্ত করতে হলে সবাইকে একসাথে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে। নাগরিকদের আরও সচেতন হতে হবে। আমরা স্কুলে স্কুল সচেতনতার কাজ শুরু করেছি। আমরা চাই সব নাগরিক ও কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বছরব্যাপী ডেঙ্গু নির্মূল কর্মসূচি। ’

আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, পবার-যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. লেলিন চৌধুরী, প্রতিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণবিষয়ক গবেষক পাভেল পার্থ, খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক রুনু আলী, বস্তিবাসী আন্দোলন সংগঠক হোসনে আরা বেগম, বিসিএইচআরডি চেয়ারম্যান মাহাবুব হক ও মো. মমতাজুর রহমান মোহন, বাংলাদেশ গ্রিন রুফ মুভমেন্ট-এর সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. গোলাম হায়দার প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

সভায় বক্তারা বলেন, এ বছর অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী এবং মৃতের সংখ্যা বিগত বছরগুলোর চেয়ে এ বছর অনেক বেশি। বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের কারণে অসংখ্য গর্তের স্থির পানি ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডে সৃষ্ট গর্তে জমা পানিতে এডিস মশার লার্ভা জন্মাচ্ছে এবং বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে।

তারা বলেন, সবাই মিলে মশা মারতে হবে। মশা যাতে জন্মাতে না পারে সেজন্য প্রজননস্থল ধ্বংস করতে হবে। মশা যাতে কামড়াতে না পারে সেদিকে সর্বোচ্চ নজর দিতে হবে। মশা তার জীবনচক্রে ১ মাসের মধ্যে যাতে ভাইরাস বহন করতে না পারে সে লক্ষ্যে আমাদেরকে কাজ করতে হবে। সেপ্টেম্বরের পর মশা কমে আসবে। তাই সেপ্টেম্বর মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সভায় বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বে আবহাওয়া উষ্ণ হচ্ছে। বৃষ্টি মৌসুম পরিবর্তন হচ্ছে। এর সঙ্গে এডিস মশাসহ নানা ধরনের কীটপতঙ্গ বেড়ে যাওয়ার একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ার কারণে উষ্ণমণ্ডলীয় এবং অ-উষ্ণমণ্ডলীয় যেসব পোকামাকড়, তাদের প্রাদুর্ভাব ধীরে ধীরে বাড়ছে। গরমের সময়টা যদি দীর্ঘ হয়, তাহলে মশা বা কীটের জীবনকালে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। তাদের প্রজননকাল দীর্ঘ হয়।

সভায় উপস্থিত বক্তরা নাগরিকের করণীয় হিসেবে বলেন, ঘরের বারান্দা, আঙ্গিনা বা ছাদ পরিষ্কার রাখতে হবে, যাতে পানি পাঁচদিনের বেশি জমে না থাকে। এসি বা ফ্রিজের নিচেও যেন পানি না থাকে, তাও নিশ্চিত করতে হবে। বারান্দা ও ঘরের টব, ছাদের বাগানের পাত্র, পুরানো টায়ার এবং যেকোনো পরিত্যক্ত পাত্রে যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এডিস মশা দিনের বেলা কামড়ায়। তাই দিনের বেলা ঘুমালে অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে। মশা যেন ডিম পাড়ার সুযোগ না পায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

কর্মসূচি গবেষণা ডেঙ্গু পবা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর