সিলেটে ‘টাইগার শার্ক ৩৭’ মহড়া দেখলেন যুক্তরাষ্ট্রের দূত
৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২৩:০৬
ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল ফোর্সেস ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডের (পিসিবি) একটি যৌথ সামরিক প্রশিক্ষণ মহড়া ‘টাইগার শার্ক ৩৭’ প্রত্যক্ষ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার। গত ১ থেকে ৩ সেপ্টেম্বর সিলেট এ প্রশিক্ষণ মহড়াটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র মিশন থেকে এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই বার্তায় বলা হয়, ‘টাইগার শার্ক-৩৭’ অনুশীলনটি বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অংশীজনদের অংশগ্রহণে সংকট মোকাবিলা ও সন্ত্রাসদমন বিষয়ক চলমান মহড়ার অংশ। মহড়াটি যুক্তরাজ্যের জয়েন্ট কাউন্টার-টেররিস্ট ট্রেনিং অ্যান্ড অ্যাডভাইজারি টিম এর সদস্যরা এবং প্রথম পিসিবি কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসিনও প্রত্যক্ষ করেন।
সেখানে রাষ্ট্রদূত মিলার ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসিন এই তিন দেশকে নিয়ে বহুপাক্ষিক প্রশিক্ষণের সুযোগের বিষয়েও আলোচনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্র রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার এই সফরের মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন ও যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সামরিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে কাজ করছেন। রাষ্ট্রদূত মিলার সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলাম এবং মেয়র আরিফুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। তারা এসময় ব্যবসাক্ষেত্রে বিনিয়োগসহ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আলোচনা করেন।
সিলেটে অবস্থানকালে রাষ্ট্রদূত মিলার ইউএসএআইডির ‘সুখী জীবন’ প্রকল্পসহ কয়েকটি কর্মসূচিও পরিদর্শন করেন। ‘সুখী জীবন’ একটি সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতাভিত্তিক (পিপিপি) কর্মসূচি যা স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ খুব সীমিত বা আদৌ কোনো সুযোগ নেই এমন এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে।
তিনি ‘ব্লু স্টার’ নামে একটি ওষুধের দোকানও পরিদর্শন করেন। যেটি সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানির (এসএমসি) নেটওয়ার্কভুক্ত ৭ হাজারের বেশি ফার্মেসির অন্যতম। ইউএসএআইডি দেশজুড়ে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এসএমসি নেটওয়ার্ককে নিয়ে কাজ করে আসছে।
রাষ্ট্রদূত মিলার সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত ‘আমেরিকান কর্নার’ পরিদর্শন করেন। ১৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই কেন্দ্র বছরে বেশ কয়েক হাজার তরুণ বাংলাদেশিকে বিভিন্নরকম কার্যক্রমে স্বাগত জানায়। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে কমিউনিটি স্তরের কর্মসূচি, ইংরেজি শেখা, নেতৃত্ব এবং কর্মী উন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালাসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি যেগুলো কিনা বাংলাদেশি ও আমেরিকানদের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়ায়।
এছাড়া প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা কিভাবে নিজেদের এলাকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েছে তা জানতে রাষ্ট্রদূত সম্মানজনক ফুলব্রাইট এবং আন্তর্জাতিক ভিজিটর লিডারশিপ প্রোগ্রামসসহ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ কর্মসূচির স্থানীয় অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
সিলেট ত্যাগের আগে রাষ্ট্রদূত মিলার বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান, চতুর্দশ শতাব্দীর শ্রদ্ধাভাজন সুফি সাধক হজরত শাহ জালালের (র) মাজার পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি স্থানীয় জলখাবার বাখরখানি ও হালুয়া উপভোগ করেন।
রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারের সিলেট সফরটি বাংলাদেশি এবং আমেরিকানদের মধ্যে সহযোগিতা, সংলাপ ও পারস্পরিক বোঝাপড়াকে এগিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক মিশনের এ বছরের অনেকগুলো উদ্যোগের একটি।