Saturday 07 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফেরিতে তিতাসের মৃত্যু: তদন্ত প্রতিবেদনে যুগ্ম সচিব-ডিসির দায় নেই


৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৬:২৩ | আপডেট: ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২০:২৯
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ফেরি ঘাটে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় সেই যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুর মন্ডলের কোনো দায় নেই বলে সিদ্ধান্তে এসেছে তদন্ত কমিটি। ওই ঘটনায় মাদারীপুরের জেলা প্রশাসকেরও কোনো দায় তদন্ত কমিটি খুঁজে পায়নি। তবে তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে ফেরি ঘাটের তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়ী করা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদনটি বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে দাখিল করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- তিতাসের মৃত্যু: ফেরি ঘাটের জন্য তদন্ত কমিটির ৭ সুপারিশ

প্রতিবেদনে ঘাটের যে তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়ী করা হয়েছে তারা হলেন— কাঁঠালবাড়ি ফেরি ঘাটের ব্যবস্থাপক সালাম হোসেন, ঘাটের প্রান্তিক সহকারী খোকন মিয়া এবং উচ্চমান সহকারী ও গ্রুপ প্রধান ফিরোজ আলমকে দায়ী করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা পরে ফেরি ছাড়ায় তিতাসের মৃত্যু হওয়ার পেছনে এই তিন জন দায় এড়াতে পারেন না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুর মন্ডল জানতেন না যে ফেরিঘাটে মুমূর্ষু রোগী আছে। কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য কোনোভাবেই ফেরি দেরি করে ছাড়া যাবে না বলে প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন- ফেরি দেরি করায় অ্যাম্বুলেন্সে রোগীর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি

তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়েছে, লাশবাহী গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্সকে অগ্রাধিকার দিতে হবে প্রথমে। প্রতিটি ঘাটে ও ফেরিতে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে গাড়ি পারাপার পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ফেরিঘাট ও ফেরিতে কর্মরত সবার নামসহ নির্দিষ্ট পোশাক পরিধানের ব্যবস্থা করতে হবে।  ঘাটে ও ফেরিতে গুরুত্বপূর্ণ ও বিভিন্ন জরুরি মোবাইল নম্বর প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল হাসান নেতৃত্বে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি এ প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন— নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আ. সাত্তার শেখ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব তোফায়েল ইসলাম।

আরও পড়ুন- ভিআইপির অপেক্ষায় ফেরি, অ্যাম্বুলেন্সেই প্রাণ গেল স্কুলছাত্রের

গত ৩১ জুলাই মাদারীপুরের কাঠালবাড়ি ফেরিঘাটে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় অতিরিক্ত সচিবের নিচে নন— এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তিতাসের পরিবারকে কেন তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।

তিতাসের মৃত্যুর ঘটনায় ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জহির উদ্দিন লিমনের দায়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এ রুল জারি করেছিলেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী মো. জহির উদ্দিন লিমন।

নড়াইল কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তিতাস ঘোষ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হলে তাকে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির উদ্দেশে আইসিইউ সম্বলিত অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে রওনা দেন পরিবারের লোকজন। রাত ৮টার দিকে কাঁঠালবাড়ি ১ নম্বর ভিআইপি ফেরিঘাটে পৌঁছায় অ্যাম্বুলেন্সটি। তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পে কর্মরত যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মণ্ডল পিরোজপুর থেকে ঢাকা আসবেন বলে ওই ফেরিকে অপেক্ষা করতে ঘাট কর্তৃপক্ষকে বার্তা পাঠানো হয়।

তিন ঘণ্টা পর সবুর মন্ডল ঘাটে পৌঁছালে ওই ফেরি ছাড়ে। এসময় অ্যাম্বুলেন্সটিও ফেরিতে ওঠার সুযোগ পায়। কিন্তু এরই মধ্যে মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে ফেরিতেই মারা যায় তিতাস। বিষয়টি জানাজানি হলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিতাসের মৃত্যু নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়।

টপ নিউজ তিতাস ঘোষ ফেরি ঘাটে তিতাসের মৃত্যু যুগ্ম সচিব সবুর মন্ডল