তিতাসের মৃত্যু: ফেরি ঘাটের জন্য তদন্ত কমিটির ৭ সুপারিশ
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৬:৩৮
ঢাকা: মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ফেরি ঘাটে ‘ভিআইপি’র জন্য অপেক্ষা করায় অ্যাম্বুলেন্সে থাকা স্কুলছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় ঘাটের তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়ী করেছে তদন্ত কমিটি। এ ঘটনায় যে ‘ভিআইপি’র জন্য ফেরি ছাড়তে দেরি করা হয়েছে, সেই যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মন্ডল বা ঘাটে ফোন করে ফেরি ছাড়তে দেরি করানো জেলা প্রশাসকের কোনো দায় নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। পাশাপাশি ফেরি ঘাটের জন্য সাত দফা সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে দাখিল করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
তদন্ত প্রতিবেদনে যে সাত দফা সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলো হলো—
১. ঘাট থেকে ফেরি ছাড়া ও পৌঁছানোর সময় মাস্টারকে অবশ্যই স্থায়ী লগ বুক বারেজিস্ট্রারের সময় লিখে সই করতে হবে;
২. ফেরি ঘাটে ভিড়িয়ে ফেরির র্যাম্প উঠিয়ে কোনো ব্যক্তির জন্য কোনোভাবেই অপেক্ষা করা যাবে না;
৩. নীতিমালার অনুযায়ী ভিআইপি সুবিধা চেয়ে কেউ ফেরি পারাপার হতে চাইলে তাকে অবশ্যই তার সরকারি ভ্রমণ বিবরণী আগে থেকেই ফেরি কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে হবে। তবে জরুরি প্রয়োজনে আগে যোগাযোগসাপেক্ষে ও অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এ নিয়ম শিথিল করা যেতে পারে;
৪. অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স বা গাড়িকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ফেরি পারাপারের ব্যবস্থা নিতে হবে;
৫. প্রতিটি ঘাট ও ফেরিতে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে গাড়ি ও ফেরি পারাপারের বিষয় পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে;
৬. ফেরিঘাট ও ফেরিতে কর্মরত সবার নাম ট্যাগসহ নির্দিষ্ট পোশাক পরতে হবে; এবং
৭. ফেরি ঘাট ও ফেরিতে জরুরি গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মোবাইল নম্বর প্রদর্শনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
ফেরি ঘাটে ‘ভিআইপি’র জন্য দেরি করায় অ্যাম্বুলেন্সে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। হাইকোর্ট বলেন, অতিরিক্ত সচিবের নিচে নন— এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে এ ঘটনা তদন্ত করতে হবে। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল হাসান নেতৃত্বে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন— নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আ. সাত্তার শেখ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব তোফায়েল ইসলাম। এই কমিটি আজ বৃহস্পতিবার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করল অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে।