চট্টগ্রাম ব্যুরো: গ্রাহকের গোপন তথ্য ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে মোবাইল অপারেটরের সিম নিবন্ধনের অভিযোগে একটি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে নগরীর বাকলিয়া থানা পুলিশ।
জালিয়াতির শিকার কয়েকজন গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বাকলিয়া থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
গ্রেফতার চার জন হলেন— ফেরদৌস সরোয়ার রবিন (১৮), মিনহাজুল ইসলাম (২৩), মিশু আহমেদ (৩০) ও জাবেদ ইকবাল (৩০)।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন সারাবাংলাকে জানান, রবিন মোবাইল অপারেটর রবি কোম্পানির পরিবেশক এ কে খান টেলিকম লিমিটেডের বিক্রয় প্রতিনিধি। বাকলিয়ার বলিরহাট এলাকার মুদি দোকানদার মুহাম্মদ ইসমাইল গত মার্চে তার কাছ থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন করে একটি সিম নিয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন অজুহাতে রবিন আরও কয়েকবার ইসমাইলের হাতের আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইসমাইল রবিনের কাছ থেকে আরেকটি সিম কিনতে গিয়ে জানতে পারেন, তার নামে আরও ৩০টি সিম নিবন্ধিত আছে। ইসমাইল বিষয়টি পুলিশকে জানালে রবিনকে আটক করা হয়। তার কাছে বিভিন্ন জনের নামে নিবন্ধিত ১৩টি সিম উদ্ধার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই চক্রের আরও কয়েকজন সদস্যের নাম প্রকাশ করেন তিনি। পরে নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন ওসি নেজাম উদ্দিন।
তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন জনের নামে নিবন্ধিত ৩১টি সিম, সিম নিবন্ধনে ব্যবহৃত একটি নোটপ্যাড, ফিংগারপ্রিন্ট নেওয়ার একটি ক্যাবল ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে বলে ওসি জানিয়েছেন।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘গ্রেফতার চার জন একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তারা গ্রাহকের আঙুলের ছাপ ও তথ্য সংরক্ষণ করে। তারপর সেগুলো দিয়ে সিম নিবন্ধন করে। প্রকৃত গ্রাহক জানতেও পারেন না, তার নামে সিম নিবন্ধিত হয়েছে। সেই সিম প্রতারক চক্রের সদস্যরা চড়া দামে বিক্রি করে। এসব সিম হাত ঘুরে রোহিঙ্গাদের কাছে পৌঁছাচ্ছে কি না, সেটাও আমরা তদন্ত করে দেখছি।’
তবে এই জালিয়াতিতে মোবাইল অপারেটরদের দায় নেই বলেও জানান উপপুলিশ কমিশনার মেহেদী। এই কর্মকর্তার মতে, পরিবেশক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে এই জালিয়াতি হচ্ছে।