ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে আগ্রহী জাপান: অর্থমন্ত্রী
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২১:০৬
ঢাকা: নেদারল্যান্ডের পাশাপাশি ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে জাপান আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) রাজধানীর শেরেবাংলানগরে অর্থমন্ত্রীর নিজ কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে মন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, “জার্মানির বন শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে অনন্য সুন্দর এক নদী ‘রাইন।’ এ নদীর এক পাশে ট্রেন অন্য পাশে গাড়ি চলে। রাইন নদীর মতো বাংলাদেশের নদীগুলোর পাড় বেঁধে দিয়ে এক পাশে ট্রেন এবং অন্যপাশে গাড়ি চালানো হবে ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নের মাধ্যমে।”
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে জাপান আসতে চায়। ফলে বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থাপনা করা হবে। নদীগুলোকে পদ্ধতিগতভাবে কাজে লাগানো হবে। রাইন নদীর মতো পাড় বেঁধে দেওয়া হবে। নদীর এক পাড়ে ট্রেন অন্যপাড়ে গাড়ি চলবে। নদীর পলি মাটিগুলোকে কাজে লাগানো হবে। নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং করে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আরও অবদান রাখবে। ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে জোর দিয়েছে জাপান। নদীর মধ্যে যে সব সম্পদ আছে তা কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে এগিয়ে আসবে জাপান।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মাতারবাড়ী প্রকল্প নিয়ে তাদের ব্যাপক আশা রয়েছে। মাতারবাড়ীর গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পরবর্তী ধাপে এটিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হবে। নেদারল্যান্ডের পাশাপাশি ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে কাজ করবে জাপান। আমাদের আরও অনাবিষ্কৃত সম্ভানাময়ী খাতগুলোসহ, বিশাল সমুদ্রের বিপুল সম্পদের সম্ভাবনা রয়েছে সে বিষয়েও তারা খুবই আগ্রহী। আমাদের যে ডেল্টা প্ল্যান জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি থেকে আমাদেরকে রক্ষা করবে, এ প্ল্যানের সঙ্গে জাপান-জাইকা সম্পৃক্ত হবে।’
লবণের উন্নয়নে জাপান এগিয়ে আসবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মাতারবাড়ীতে অত্যাধুনিক লবণ উৎপাদন কারখানা স্থাপন করবে জাপান। ফলে লবণ প্রক্রিয়াজাতকরণ থেকে শুরু করে রফতানিতে অবদান রাখবে।’
জাপানে জনশক্তি রফতানি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘সম্প্রতি জাপান সফরে এ বিষয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও জাপানের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। জাপানে জনবল পাঠানোর বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। জাপানিরা খুবই শান্তিপ্রিয় জাতি। তারা খুব জোরে কথা বলা পছন্দ করে না। সুতরাং এ সব বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে জাপানে লোক পাঠানো হবে। জাপানে লোক পাঠানোর জন্য ভাষা ও সংস্কৃতির বিষয়ে বেশি বেশি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আর্থিক ব্যবস্থাপনায় সব ধরনের সহায়তা দিতে জাইকা প্রস্তুত। আমাদের অর্থনৈতিকখাতের অটোমেশন ও ব্যবস্থাপনায় জাপান সহযোগিতা করবে। যার মাধ্যমে এনবিআর সম্পূর্ণভাবে অটোমেটেড হবে পাশাপাশি ব্যাংকখাত, ইন্স্যুরেন্স, পুঁজিবাজার অটোমেশনে চলে আসবে।’
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘জাপান বাংলাদেশ নিয়ে বেশ আশাবাদী। জাপান মানে বাংলাদেশে কোনো বিষয়ে ফেল করবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে তার নিজস্ব গতিতে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায়। বাংলাদেশের অগ্রগতির ধারা এবং আশেপাশের দেশের তুলনায় বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের আকর্ষণীয় এলাকা।’
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।