Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সালমান শাহ হত্যা না আত্মহত্যা, ২৩ বছরেও মেলেনি উত্তর


৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১৪

ঢাকা: দেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ’র মৃত্যুরহস্য আজও উদঘাটন হয়নি। ফলে সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে নাকি তিনি আত্মহত্যা করেছেন তা ২৩ বছরেও অজানা রয়ে গেছে।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহ মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে রাজধানীর রমনা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন সালমান শাহ’র বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। কিন্তু মৃত্যুর একবছর না যেতেই ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনে আদালতে মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করার আবেদন জানান তিনি। ফলে সালমান শাহ’র মৃত্যুর কারণ নিয়ে রহস্য দেখা দেয়।

বিজ্ঞাপন

সালমান ভক্তদের মনে আজও রহস্য রয়ে গেছে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছিলেন নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছিল।

বর্তমানে মামলাটি ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ আদালতে পুনঃতদন্তের প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১ অক্টোবর তারিখ ধার্য রয়েছে।

সালমা‌ন শাহর মা (নীলা চৌধুরী) মোবাইল ফোনে সারাবাংলাকে, ‘এ মামলা নিয়ে তামাশা চলছে। যত‌দিন আমার প্রাণ আছে, তত‌দিন পর্যন্ত এ মামলায় লড়ে যাব। লোকজনের ইন্ধনেই এ মামলায় এত সময় লাগছে।’

এ বিষয়ে বর্তমানে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসালম সারাবাংলাকে বলেন, গত ১ সেপ্টেম্বর মামলার অগ্রগতি বিষয়ে আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তধীন অবস্থায় আছে। তদন্ত শেষ হলেও আদালতে চার্জশিট দাখিল করতে পারব।

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, ‘কবেনাগাদ মামলার তদন্ত শেষ হবে সেই বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন মামলাটি হওয়ায় অনেক সাক্ষীর মৃত্যু হয়েছে। আবার অনেকের সন্ধান পেতে বেগ পোহাতে হচ্ছে। সবমিলিয়ে তদন্ত শেষ হওয়া মাত্র আদালতে চার্জশিট দাখিল করতে পারব।’

বিজ্ঞাপন

সালমান শাহের পক্ষে আইনজীবী ফারুক আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘মামলাটিতে আগের চেয়ে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এরইমধ্যে কয়েকজনের সাক্ষ্যগ্রহণ (ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ধারায়) শেষ হয়েছে। মামলাটি এগিয়ে নেওয়ার জন্য সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। তদন্তকারী কর্মকর্তা এখনও মামলাটির চার্জশিট দাখিল করেননি। তদন্ত কর্মকর্তা চার্জশিট দাখিল করা মাত্রই বিচার সম্ভব হবে বলে আশা করি।’

মামলাটিতে প্রথমে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহের মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়। ওই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ওই প্রতিবেদন গৃহীত হয়। কিন্তু সিআইডি’র প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা দায়ের করেন। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠায় আদালত। প্রায় ১৫ বছর মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল।

২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। এ প্রতিবেদনে সালমান শাহ’র মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়। একই বছরের ২১ ডিসেম্বর সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী ছেলের মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেবেন বলে আবেদন করেন।

২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নীলা চৌধুরী ঢাকা মহানগর হাকিম জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের নারাজির আবেদন দাখিল করেন। নারাজি আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আজিজ মোহাম্মদ ভাই, রিজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ, নজরুল শেখ, সামিরা হক, লতিফা হক লুসি, ডেভিড, আশরাফুল হক ডন, রাবেয়া সুলতানা রুবি, মোস্তাক ওয়াইদ, আবুল হোসেন খান ও মনোয়ারা বেগম এ ১১ জন সালমান শাহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারেন।

মামলাটিতে ‌র‌্যাবকে তদন্তভার দেওয়ার আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা করেন। ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ-৬-এর বিচারক ইমরুল কায়েস রাষ্ট্রপক্ষের রিভিশনটি মঞ্জুর করেন এবং র‌্যাব মামলাটি আর তদন্ত করতে পারবে না বলে আদেশ দেন। এরপর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ওপর তদন্তের ভার পড়ে।

এদিকে চিত্রনায়ক সালমান শাহকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে এমন দাবিতে সিএমএম আদালতের সামনে গত ১ সেপ্টেম্বর বিচার চেয়ে ‘মানববন্ধন’ করেছেন ভক্তরা।

সালমান শাহ সালমান শাহ’র মৃত্যুরহস্য হত্যা না আত্মহত্যা?

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর