Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রোহিঙ্গা ইস্যু: চীনের মধ্যস্থতায় ফের বসছে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক


৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৮:২৫

ঢাকা: রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে নিউইয়র্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে একাধিক কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে। বেইজিংয়ের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ, মিয়ানমার এবং চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা নিউইয়র্কে জাতিসংঘের কার্যালয়ে এ বৈঠকে বসতে পারেন।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার চীনের ওপর আস্থা রাখছে। চীনের মধ্যস্থতায় এবং উপস্থিতিতে এরই মধ্যে দুইদেশের মধ্যে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ গত ২২ আগস্ট দ্বিতীয়বারের মতো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। এ সংকট কাটাতে চীনের উদ্যোগ চলমান রয়েছে। আগামী ত্রিপক্ষীয় বৈঠকটিও চীনের উদ্যোগেই হচ্ছে। বৈঠকের তারিখ এখনও চূড়ান্ত না হলেও তা আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের আশেপাশের কোনো তারিখেই অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি চলছে।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নিউইয়র্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি এখনও জানি না।’

মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এবং বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের সাবেক নিউজ এডিটর ল্যারি জ্যাগান ব্যাংকক পোস্টে প্রকাশিত এক কলামে লিখেছেন, ‘আশা করি, রোহিঙ্গা ইস্যুতে গত আগস্টের অপরিকল্পিত উদ্যোগ থেকে সব পক্ষ শিক্ষা নেবে। আগামী উদ্যোগগুলো অবশ্যই সুপরিকল্পিত হতে হবে, যাতে সত্যিকার অর্থেই রোহিঙ্গা সংকটের জট খোলে। প্রত্যাবাসন বিষয়ে দুই দেশের সীমান্তেই বিস্তারিত প্রস্তুতি নিতে হবে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের মতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এই প্রস্তুতির সঙ্গে অবশ্যই জাতিসংঘকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

তিনি আরও জানান, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার উভয়ই রাজি হয়েছে। আবার সহায়তা (এইড), বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ও মিয়ানমার চীনের ওপর নির্ভরশীল। দুইটি দেশই কৌশলগত অবস্থান থেকে বেইজিংয়ের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বেইজিংয়ের সঙ্গে ঢাকা এবং নেপিডো উভয়েরই শক্তিশালী সামরিক যোগাযোগ রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার উভয়েই বিশ্বাসযোগ্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে চীনের ওপর আস্থা রেখেছে।

প্রসঙ্গত জাতিসংঘসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং কানাডার সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা এরই মধ্যে জানিয়েছে যে, প্রত্যাবাসনের জন্য কোনো অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেনি মিয়ানমার। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমার সরকার আন্তরিক নয়।

উল্লেখ্য, গত ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের একাধিক শিবিরে মিয়ানমারের ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে। রাখাইন সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। তুমুল সমালোচনা করছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, কুয়েত, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পুরো বিশ্ব।

চীন ত্রিপক্ষীয় বৈঠক বাংলাদেশ মিয়ানমার রোহিঙ্গা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর