ঢাকা: ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ঘোষিত বাজেটকে পরনির্ভর বাজেট আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেছেন, নিজেদের সক্ষমতা ছাড়া সিটি করপোরেশন ঘোষিত এ বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন হবে।
শনিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামটরে অবস্থিত প্ল্যানার্স টাওয়ারে দুই সিটির ঘোষিত বাজেট পর্যালোচনামূলক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
আকতার মাহমুদ বলেন, ‘দুই সিটির বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তাদের আয়ের মূল উৎস ধরা হয়েছে সরকারি বা বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট অনুদান। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ অনিশ্চিত একটি খাত। অথচ করপোরেশনকে সবচেয়ে বেশি নজর দিতে হবে ট্যাক্সেস অ্যাসেসমেন্টের দিকে। না হলে বাজেট যাই ঘোষণা করুক বাস্তবায়ন অসম্ভব হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডিএসসিসি গত বছর যে বাজেট ঘোষণা করেছিল তার ৫২ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। আর ডিএনসিসি করেছে ৭০ শতাংশ। তারা বাজেটের শতভাগ বাস্তবায়ন করতে পারেনি। কারণ তারা পরনির্ভর বা বৈদেশিক সাহায্য নির্ভরশীল ছিল। যে কারণে আয় হয়নি, কাজও হয়নি ‘
এর আগে লিখিত বক্তব্যে বিআইপির সাধারণ সম্পাদক ও নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘দুই সিটির ঘোষিত বাজেটে বরাদ্দ ও প্রকল্প প্রণয়নে এলাকা এবং ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়নের তারতম্য ও বৈষম্য রয়েছে। এলাকা এবং ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়ন ও নাগরিক সেবার প্রকৃত চিত্র অনেকাংশেই অনুপস্থিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর মশা নিধন খাতে বরাদ্দ বেড়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যখাতেও অপ্রতুল বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। খেলার মাঠ, পার্ক, বিনোদন সুবিধার এলাকাভিত্তিক পরিকল্পনা অথবা বরাদ্দের কোনো দিক নির্দেশনাও নেই। আবার ঘোষিত খাতগুলো কেন, কোথায়, কোন বিবেচনায়, কতটুকু অর্থায়ন প্রয়োজন ছিল ও সামনের বছরগুলোতে অথবা ভবিষ্যতে কোথায় কিংবা কোন এলাকায় উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া হবে তারও কোনো নির্দেশনা নেই। সুতরাং এমন বাজেটের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানো অনেকাংশেই কঠিন এবং প্রায় অসম্ভব হবে।’
সম্প্রতি ডিএসসিসির বাজেট ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে নগর উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের বিপরীতে সাংবাদিকদের প্রতি ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের অসৌজন্যমূলক আচরণে সংগঠনের পক্ষ থেকে তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেইসঙ্গে ওই ঘটনায় কাউন্সিলরদের উত্তেজনা থামাতে ডিএসসিসির মেয়রের ভূমিকাকে প্রশংসনীয় ও ইতিবাচক বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিআইপির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ কে এম আবুল কালাম, উপদেষ্টা পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. গোলাম মর্তুজা।