‘বিভিন্ন রুটে ইলেকট্রিক ট্রেন চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে’
৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২১:৩৩
জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে গত এক দশকে রেলওয়েকে ঢেলে সাজাতে বহু কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি আরও জানান, এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ রেলওয়ে নারায়নগঞ্জ-ঢাকা-জয়দেবপুর রুটে ইলেকট্রিক ট্রেন চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশনে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য এম আবদুল লতিফের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। বিকেল ৫টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিনের কার্যসূচি শুরু হয়।
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘রেলওয়েকে জনগণের নিকট নির্ভরযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যহত রাখা হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা-জয়দেবপুর রুটে ইলেকট্রিক ট্রেন চালু করা হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম সেকশনে ইলেকট্রিক ট্র্যাকশন (ওভারহেড ক্যাটিনারী ও সাব-স্টেশন) প্রবর্তনের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রস্তাব রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। উক্ত সমীক্ষা প্রকল্পের ওপর পরিকল্পনা কমিশনে ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। পিইসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৮১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সমীক্ষা প্রস্তাব পুনর্গঠন করে ২০১৬ সালের ৩০ মার্চ পুনরায় পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়। অন্যদিকে ২০১৬ সালের ১৩ মার্চে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পর্যায়ক্রমে বৈদ্যুতিক ট্রেন চালুর অংশ হিসেবে গাজীপুর-নারায়নগঞ্জ বৈদ্যুতিক ট্রেন প্রথম চালু করতে হবে।
মন্ত্রী আরও জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ভৌত অবকাঠামো বিভাগ, ২০১৬ সালের ২৫ জুলাই পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্পের যৌক্তিকতা পর্যালোচনা বিষয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় নারায়নগঞ্জ হতে চট্টগ্রাম পর্যন্ত সম্ভাব্যতা সমীক্ষার পরিবর্তে নারায়নগঞ্জ হতে ঢাকা হয়ে জয়দেবপুর পর্যন্ত ইলেকট্রিক ট্র্যাকশন (ওভারহেড ক্যাটিনারী ও সাব স্টেশন নির্মাণসহ) প্রবর্তনের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে যেতে পারে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
সবশেষ ২০১৯ সালের ৭ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম সেকশনে ইলেকট্রিক ট্র্যাকশন (ওভারহেড ক্যাটনারী ও সাব স্টেশন) প্রবর্তনের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্পের ওপর পরিকল্পনা কমিশনে পুনরায় পিইসির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে সমীক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ করে নারায়নগঞ্জ হতে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বৈদ্যুতিক ট্রেন সার্ভিস চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে এবং সেই অনুযায়ী বিনিয়োগ প্রকল্প গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করা হবে।
বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘রেলওয়ে সবচেয়ে বড় গণপরিবহন। সরকারি সংস্থা হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে পরিকল্পনা প্রণয়নের চেয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের জন্য সেবা প্রদানের বিষয়টি বিবেচনায় এনে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। সেজন্য ১৯৯২ সাল হতে ২০১২ সাল পর্যন্ত ২০ বছরে রেলওয়ের ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়নি। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের রেলওয়ে ব্যয় ছিল ৩১১৫ কোটি অন্যদিকে ব্যয় ছিল ১৬১৮ কোটি টাকা। আয়ের তুলনায় ১৪৯৭ কোটি টাকা ব্যয় বেশি হয়েছে। শুধুমাত্র যাত্রী ভ্রমণই নয় রেলওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী স্কুল, হাসপাতালের মাধ্যমেও দেশের জনগণ সামাজিক ও নিরাপত্তামূলক সেবা পেয়ে আসছে, যার ব্যয় রেলওয়ে থেকে নির্বাহ করা হচ্ছে। এতে রেলেওয়ের ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে ২৬ বছরে মাত্র দুই বার ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরফলে আয়-ব্যয়ের পার্থক্য পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।’