সংসদ ভবন থেকে: জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ ও উপনেতা হিসেবে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে স্বীকৃতি দিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সংসদ সচিবালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংসদীয় দলের নেতা রওশন এরশাদকে (ময়মনসিংহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য) জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী বিরোধী দলীয় নেতা এবং উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) অধ্যাদেশ মোতাবেক (লালমনিরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য) গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরকে বিরোধী দলীয় উপনেতা হিসেবে স্পিকার স্বীকৃতি দিয়েছেন। আইন অনুযায়ী বিরোধী দলীয় নেতা মন্ত্রী ও উপনেতা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা ভোগ করেন।
এর আগে, রোববার বিকেলে জাতীয় পার্টির একটি প্রতিনিধি দল সংসদ ভবনে স্পিকারের কার্যালয়ে দেখা করেন। সে সময় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে রওশন এরশাদের নাম প্রস্তাব করে স্পিকারের কাছে দলটির পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। রাতে অধিবেশন শেষে জি এম কাদেরের নেতৃত্বে আরেকটি প্রতিনিধি দল স্পিকারের সঙ্গে দেখা করেন। রওশন এরশাদকে বিরোধী দলীয় নেতা এবং জি এম কাদেরকে বিরোধী দলীয় উপনেতা করার প্রস্তাবটি স্পিকারকে জানিয়ে আসেন তারা।
এর আগে, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের মৃত্যুর পর দলের নেতৃত্ব নিয়ে সংকট দেখা দেয়। এরশাদ মৃত্যুর আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন, তার অবর্তমানে জি এম কাদের হবেন পার্টির চেয়ারম্যান। সে অনুযায়ী এরশাদের মৃত্যুর পর জি এম কাদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করলেও তার বিরোধিতা করেন রওশন এরশাদ। তার অনুসারীদের দাবি, দলের প্রেসিডিয়াম বৈঠকে চেয়ারম্যান নির্ধারিত হতে হবে।
এদিকে, চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জি এম কাদের নিজেকে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা করতেও চিঠি দেন স্পিকারকে। পরদিন রওশন এরশাদ ওই চিঠি আমলে না নিতে স্পিকারকে পাল্টা চিঠি দেন। পরে রওশন নিজেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা করে সংবাদ সম্মেলনও করেন। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে ভাঙনের মুখে পড়ে জাতীয় পার্টি।
শেষ পর্যন্ত দলের মহাসচিব ও প্রেসিডিয়াম সদস্যদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, জি এম কাদের দলের চেয়ারম্যান ও রওশন এরশাদ সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এ সিদ্ধান্ত মেনে নেন দুই নেতাই।