বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রশংসা, দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার আশ্বাস জাপানের
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৮:৩২
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি গত ১০ বছরে বাংলাদেশের চমৎকার আর্থসামাজিক উন্নয়নের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। একইসঙ্গে দেশের সার্বিক উন্নয়নে জাপানের পক্ষ থেকে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তারও আশ্বাস দিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত ১০ বছরে আর্থসামাজিক খাতে, বিশেষ করে জিডিপি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে চমৎকার সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে আমরা দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা দিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় সংসদ কার্যালয়ে তার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতে রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি এসব কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রেস সচিব জাপানের রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে বলেন, তিনি বলেছেন, আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ উন্নয়নের এক ঐতিহাসিক সুযোগ পেয়েছে। জাপানের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগে আগ্রহী। জাপানের বহুজাতিক গাড়ি নির্মাতা মাজদা মোটর করপোরেশন বাংলাদেশে একটি অটোমোবাইল প্ল্যান্ট স্থাপনে আগ্রহী। জাপান বাংলাদেশে একটি এলপিজি টার্মিনাল স্থাপনেও আগ্রহী।
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে হিরোইয়াসু ইজুমি বলেন, ‘এ ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রতি সবসময় আমাদের সহানুভূতি রয়েছে।’ তিনি মিয়ানমার সীমান্ত বরাবর কাঁটাতারের বেড়া না দিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গা সংকট শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে বাংলাদেশের প্রচেষ্টারও প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তা খুবই প্রশংসনীয়।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহায়তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে জাপান দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি মেট্রোরেল, মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্ট ও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণে জাপানের সহায়তার বিশেষ প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, এতে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বাড়বে। এ প্রসঙ্গে তিনি এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ আরও বাড়াতে বিসিআইএম ও বিবিআইএন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার কক্সবাজারের সাবরাংয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠায় জাপানকে জমি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। জাপান সেখানে সমুদ্র সৈকতও করতে পারে।
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে তাদের রাজি করানোর জন্য জাপানের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বিরাট বোঝা। মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের নাগরিকদের এখান থেকে ফেরত নিতে হবে।’
প্রেস সচিব বলেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে তার দেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। জবাবে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়ে জাপানের জন্য একটি বিশেষ স্থান রয়েছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন। বাসস।
জাপানের রাষ্ট্রদূত জাপানের সহযোগিতা জিডিপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়ন হিরোইয়াসু ইজুমি