গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে বৈধ সফট্ওয়্যার ব্যবহার হবে

ঢাকা:  এখন থেকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন গণপূর্ত অধিদপ্তর, রাজউকসহ অন্যান্য দপ্তরে আইনগতভাবে বৈধ সফটওয়্যার ব্যবহার করা হবে।

মঙ্গলবার ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে  গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম একথা বলেন।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আইটেক আনলিমিটেড আয়োজিত ‘অ্যাডভান্সড ট্রেনিং অন লাইসেন্সড অটোক্যাড’ শীর্ষক প্রশিক্ষণের সনদপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, আইনসঙ্গত কাজ করাই আইনের শাসন। সে আঙ্গিকে অন্যভাবে সংগৃহীত সফট্ওয়্যার ব্যবহার করা আইনসঙ্গত নয়। তাই ভবিষ্যতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন গণপূর্ত অধিদপ্তর, রাজউকসহ অন্যান্য দপ্তরে আইনগতভাবে বৈধ সফটওয়্যার ব্যবহার করা হবে, বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যমান আইনে পাইরেসি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ অপরাধে সর্বোচ্চ সাত বছরের সাজা হতে পারে। তথ্য প্রযুক্তি সংক্রান্ত সাইবার অপরাধও এর অন্তর্ভূক্ত। আমরা এখন আইনসম্মত প্রক্রিয়ায় আইনানুগ উপায়ে স্থাপত্য অধিদপ্তরে সফট্ওয়্যার এনেছি।’

গণপূর্তমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রযুক্তি ‍নির্ভরতা বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ, আধুনিক ও বিশ্বমানের একটি রাষ্ট্রে পরিণত হতে সহায়তা করেছে। বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। এই ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্ট্রা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি শুধু স্বপ্ন দেখেন না, স্বপ্ন বাস্তবায়নও করেন। বাংলাদেশে ডিজিটাল রাষ্ট্রব্যবস্থা আজ সরকারি, বেসরকারি ও সাধারণ নাগরিকের কর্মকান্ডে সর্বত্র পৌঁছে গেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্থপতিদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘স্থাপত্য অধিদপ্তর কম জনবল নিয়ে সারা বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে। স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতিদের বিরুদ্ধে সরকারি দায়িত্ব পালনে বড় কোন অভিযোগ নেই। এটি প্রতিষ্ঠানটিকে স্বতন্ত্র্য করেছে, বিশেষায়িত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। অধিদপ্তরের স্থপতিদের এ জায়গা ধারণ করতে হবে, বিশ্বাস করতে হবে এবং চর্চা করতে হবে যাতে আরো বেশি উৎকর্ষ সাধন করা যায়। সৃষ্টির ভেতর থেকে স্থপতিদের টিকে থাকতে হবে। রক্ত মাংসের দেহ নশ্বর, কিন্তু কীর্তি অবিনশ্বর। অবিনশ্বর কীর্তির ভেতরে টিকে থাকার জন্য আমি চাই স্থপতিদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হোক।’

তিনি আরো বলেন, ‘সৃজনশীলতা মানুষের সুকুমার বৃত্তি বিকাশের জায়গা। নান্দনিকতা ও শৈলী বিকাশের একটা ক্ষেত্র আপনাদের শিক্ষা ও কর্মজীবনে রয়েছে। আপনাদের মানসিকতাকে আরো ইতিবাচক করে তুলতে হবে, রূদ্ধতা ও সীমাবদ্ধতার জায়গায় থাকা যাবে না। মনে রাখবেন সৃষ্টির ভেতরে যে আনন্দ আছে অনুকরণের ভেতরে সে আনন্দ নেই। নিজের কীর্তিকে সৃষ্টি করার মধ্য থেকে জীবন উল্লাসে মেতে উঠতে হবে।’

নিজেদের স্বকীয়তা রক্ষা করার গুরুত্ব উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের কর্মস্পৃহা, অদম্য গতি, আন্তরিকতা আর প্রচেষ্টা দিয়ে শৃঙ্খলিত একটি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। স্থপতিদের কাছে আহ্বান থাকবে, সৃষ্টির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করুন, নিজেকে নিবেদন করুন। তাহলে আপনাদের আত্মার ক্ষুধা নিবারণ হবে।’

অনুষ্ঠান শেষে স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১৮ জনকে সনদপত্র প্রদান করা হয়।

আইটেক আনলিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম এইচ শহীদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার এবং আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসির।

এছাড়াও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ ইয়াকুব আলী পাটওয়ারী, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সাহাদাত হোসেন, স্থাপত্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের স্থপতিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।