‘স্বাধীনতার পর কোনো বাংলাদেশি ভারতে যায়নি’
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৩:৩৮
ঢাকা: স্বাধীনতার পর কোনো বাংলাদেশি ভারতে যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি আসাম সফরে গিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, জাতীয় নাগরিক তালিকায় যাদের নাম নেই, তাদের একজনকেও ভারতে থাকতে দেওয়া হবে না। সবাইকে ভারত ছাড়া করা হবে।
এই বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশ আমাদের প্রতিবেশি দেশ, বন্ধু দেশ- তাদের আসাম থেকে আজকে হুমকি দিচ্ছে, তাদের মন্ত্রীরা হুমকি দিচ্ছে, তাদের রাজনীতিবিদরা হুমকি দিচ্ছে যে, বাংলাদেশিরা অনু্প্রবেশ করেছে, তাদেরকে তারা বের করে দিয়ে আবার বাংলাদেশে পাঠাবে।’
‘আমরা পরিষ্কার ভাষায় ঘোষণা করতে চাই, কোনো বাংলাদেশি কখনো ভারতে যায়নি স্বাধীনতার পরে। আজকে গভীর চক্রান্ত শুরু হয়েছে বাংলাদেশকে বিপদগ্রস্ত করার জন্য, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে যিনি গণতন্ত্রের প্রতীক, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক, তাকে মুক্ত করে, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে মুক্ত করে আমরা আমাদের অধিকারকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব। দেশবাসীকে আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, দলমত নির্বিশেষে সবাই মিলে আমরা আমাদের স্বার্থ রক্ষা করব।
দুর্নীতি ও লুটপাটের বিষয়টি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা শুনেছেন, পত্রিকায় পড়েছেন, টেলিভিশনে দেখেছেন, কীভাবে লুটপাট করছে তারা, কীভাবে দুর্নীতি করছে। আজকে সেই দুর্নীতির টাকা বিদেশে পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে। দেশের মানুষের প্রতি তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। তারা বাংলাদেশের মানুষকে ভালবাসে না বলেই গণতন্ত্রহীন একটা অবস্থার মধ্যে আমাদেরকে নিয়ে এসেছে।’
‘যার ফলে তারা বাংলাদেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে। তারা রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারছে না। কারণ, তাদের সেই বৈধতা নেই, তাদের সেই সাহস নেই, তাদের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির করণে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারছে না। গত দুই বছরে তারা একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠাতে পারেনি’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মানবন্ধন কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, মুজিবুর রহমান সারোয়ার, হাবীব উন নবী খান সোহেল সহ অনান্য নেতারা।
গত ৩১ আগস্ট প্রকাশিত ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) থেকে বাদ পড়েন প্রায় ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ নাগরিক। ওই দিন এনআরসি কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পাওয়ার জন্য মোট আবেদনকারী ছিল ৩ কোটি ৩০ লাখ। এদের মধ্যে নাগরিক হিসেবে স্থান পেয়েছেন ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জন। বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন।