প্রতারণার দায়ে থাই নাগরিক সমইয়োথ কারাগারে
১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৭:২২
ঢাকা: প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও বিশ্বাসভঙ্গের মামলায় থাই নাগরিক কিয়াটকাট সমইয়োথকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের বিচারক রাজেশ চৌধুরী তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে, গত ৫ সেপ্টেম্বর সমইয়োথের বিরুদ্ধে একই আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। পরোয়ানা মেনে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন সমইয়োথ। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগুলো প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন- বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের থাই সদস্য গ্রেফতার
সিয়াম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সমইয়োথ থানাপোল চাকপাওনাম ওরফে কিয়াটকাটের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণা অভিযোগে ৪০৬ ও ৪২০ এবং আত্মাসাতের অভযোগে ৪০৩ ধারায় মামলা দায়ের করে অমিত গ্রুপ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০১৭ সালে একটি ক্লাবের লাইসেন্স অমিত গ্রুপের কাছে হস্তান্তরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। চুক্তির সময় সমইয়োথ এক কোটি টাকা নিয়েছিলেন। অথচ সেই শেয়ার তিনি ২০১১ সালেই অন্য এক প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন।
বাদী মামলাটি সিএমএম আদালতে দায়ের করার পর আদালত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে পিবিআই প্রতিবেদন দাখিল করে।
প্রতিবেদনে সমইয়োথ থানাপোল চাওপাকনামের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণা এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। পিবিআই পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম গত জুন মাসে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত তদারকি করেন পিবিআইয়র বিশেষ পুলিশ সুপার মো. শাহাদাত হোসেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সমইয়োথ (পাসপোর্ট নম্বর এএ৬৩৬৫৪৯১) থাই ইন্টারন্যাশনাল রিক্রিয়েশন লিমিটেডের (থাই ইন্টারন্যাশনাল ক্লাব নামেও পরিচিত) মালিকানা দাবি করেন। ২০১৭ সালে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান অমিত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেনের কাছে এই মালিকানা বিক্রির প্রস্তাব দেন সমইয়োথ । তাদের মধ্যে তিন কোটি টাকার চুক্তি হয়। চুক্তি সইয়ের সময়ই এক কোটি টাকার চেক বুঝে নেন এই থাই নাগরিক। সেই টাকা তার অ্যাকাউন্টে ডেবিটও হয়। বাকি দুই কোটি টাকা মালিকানা হস্তান্তরের সময় গ্রহণ করার কথা ছিল।
ওই চুক্তির পর দুই বছর পেরিয়ে গেলেও মালিকানা হস্তান্তর করেননি সমইয়োথ। এ নিয়ে অমিত গ্রুপের সন্দেহ হলে তারা খোঁক-খবর নিয়ে জানতে পারেন, ২০১০ সাল পর্যন্ত থাই ইন্টারন্যাশনাল ক্লাবে সামওয়াথের ৬০ ভাগ শেয়ার ছিল। ২০১১ সালে তিনি তার ভাগের সব শেয়ার বিক্রি করে দেন। তা সত্ত্বেও ২০১৭ সালে তিনি অমিত গ্রুপের কাছে ওই শেয়ারগুলো বিক্রির নামে প্রতারণা করেন।
মামলার বিষয়ে অমিত গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার কামরুজ্জামান শাহীন বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে আদালতে যেতে চাইনি। কিন্তু ওই থাই নাগরিক বারবার কথা দিয়েও কথা রাখেননি, বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন, প্রতারণা করেছেন। তাই শেষ পর্যন্ত আমরা আদালতের আশ্রয় নিয়েছে।
শাহীন আরও বলেন, মামলা দায়েরের পর পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পরও আমরা আপস করার চেষ্টা করেছি। গত ৩০ জুলাই এক মিটিংয়ে তিনি সব টাকা ফেরত দেবেন বলে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই কথাও রাখেননি।