Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাশে ২০ দল, মাঠে এলডিপি!


৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৮:৫৬

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সংকটকালে বিএনপির পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ২০ দলীয় জোটের শরিক দলের নেতারা। রায়ের তারিখ ঘোষণার পর খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠককালে আবেগঘন বক্তব্যে তারা এ প্রতিশ্রুতি দেন।

কিন্তু খালেদা জিয়ার রায় ঘোষণার দিন বৃহস্পতিবার জোট শরিকদের মাঠে দেখা যায়নি। শুক্রবার বিক্ষোভ মিছিলেও অংশ নেননি তারা। কেবল রায়ের দিন মগবাজার থেকে কাকরাইল পর্যন্ত খালেদা জিয়ার গাড়ি বহর ঘিরে যে শো-ডাউনটুকু হয়েছে সেখানে অংশ নিয়েছেন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম।

এ ছাড়া এলডিপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন গণতান্ত্রিক যুবদলের সভাপতি তমিজ উদ্দিন টিটু, সাধারণ সম্পাদক শফিউল বারী রাজু, গণতান্ত্রিক ছাত্রদলের সভাপতি মাহবুবুর রহমানসহ এলডিপির কয়েক শ’ নেতা-কর্মী খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরের সঙ্গে মগবাজার থেকে কাকারাইল পর্যন্ত শো-ডাউন করেন। এ সময় সামান্য আহত হন শাহাদাত হোসেন সেলিম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অনুসারীদের নিয়ে শুক্রবার বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিতে গেলেও শেষ পর্যন্ত পুলিশের বাধায় পল্টনে নিজ কার্যালয়ে ফিরে আসেন শাহাদাত হোসেন সেলিম। আগামী কাল শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে খালেদা জিয়ার রায় ও বাংলাদেশের রাজনীতির সার্বিক পরিস্থিতিতে এলডিপির অবস্থান তুলে ধরবেন দলটির চেয়ারম্যান ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বীর বিক্রম।

অবশ্য এলডিপির বাইরে বিএনপি নেতৃত্বাধী জোটের আরেক শরিক দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ রায়ের দিন বকশীবাজার কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু ঢুকতে না পেরে বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মোড়ে বিএনপি আইনজীবীদের সঙ্গে অবস্থান নেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, শরিক দলগুলোর মধ্যে এই দুই দলের দুই শীর্ষ নেতা ছাড়া গত দুই দিনে রাজপথে নামেননি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের কোনো নেতা। জোট নেতার ৫ বছরের কারাদণ্ড হলেও এখনো পর্যন্ত শরিক দলগুলোর পক্ষ থেকে কোনো কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়নি।

গত ২৫ জানুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণের পর ২৮ জানুয়ারি জোট নেতাদের ডেকে মতামত গ্রহণ করেন খালেদা জিয়া। ওই দিন তাদের বলে দেওয়া হয়, বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর পরবর্তী নির্দেশনা তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।

সূত্রমতে, এর পর স্থায়ী কমিটির সঙ্গে দুই দফা বৈঠক হলেও ২০ দলীয় জোটকে কোনো দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়নি বিএনপির পক্ষ থেকে। দলটির কোনো পর্যায়ের কোনো নেতা জোট নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার রায় পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে কথাও বলেননি।

সঙ্গত কারণেই জোট নেতারা বলছেন, বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো দিক-নির্দেশনা না থাকায় তারা মাঠে নামেননি। বিএনপি বাদে জোটের ১৯টি শরিক দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক মিলে ৩৮ জন নেতার মধ্যে কেবল ২ জন নেতাকে দু’টি স্পটে দেখা গেছে। বাকি ৩৬ জনের একজনকেও গত দুই দিনে মাঠে দেখা যায়নি।

জানতে চাইলে এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার মাঠে নামাটা দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেকই হয়েছে। দলের ছাত্র সংগঠনের বেশ কিছু নেতা-কর্মী নিয়ে আমি খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে ছিলাম। জাতীয় দলের সভাপতি এহসানুল হুদাও আমার সঙ্গে ছিলেন। এ ধরনের কর্মসূচিতে তো আর দলের চেয়ারম্যান বা মহাসচিব উপস্থিত থাকতে পারেন না। তাদের নির্দেশেই আমাদের থাকতে হয়। বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবেই নিতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে আমাদেরকে ইনস্ট্রাকশ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি দেওয়া হয়নি। একজন আইনজীবী হিসেবে মামলার রায় শোনার জন্য বকশীবাজার হাজির হয়েছিলাম। কিন্তু ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরে বিএনপির আইনজীবীদের সঙ্গে বাইরে অবস্থান করেছি।’

বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘মাঠে নামার ব্যাপারে বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা জোটের জন্য ছিল না। সে কারণে আমরা নামিনি। জোটগতভাবে কোনো প্রোগ্রাম দেওয়া হলে অবশ্যই আমরা সেটি পালন করব।’

তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, জোট নেতাদেরকে আলাদাভাবে দিক-নির্দেশনা দেওয়ার কিছু নেই। কারণ, রায়ের আগের দিন গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকেই বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোট নেতাদেরকে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন খালেদা জিয়া। তার দেওয়া দিক-নির্দেশনার পর নতুন করে বা আলাদা করে কোনো দিক-নির্দেশনার প্রয়োজন নেই।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘রায়ের আগের দিন খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে ২০ দলসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন— এটাই জোটের জন্য বিএনপির দিক-নির্দেশনা।’

সারাবাংলা/এজেড/আইজেকে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর