চট্টগ্রামে সেতুর দাবিতে ঘেরাও-অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা সিপিবির
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২১:২০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর প্রায় শতবর্ষী জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতুর স্থানে নতুন রেলসহ সড়ক সেতু নির্মাণের দাবিতে ঘেরাও-পদযাত্রা, অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীতে কালুরঘাট সেতুর পশ্চিম প্রান্তে গণজমায়েত থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। গণজমায়েত শেষে ‘লাল পতাকা পদযাত্রা’ নিয়ে কালুরঘাট সেতু পার হন সিপিবির নেতাকর্মীরা। এতে সেতুর আশপাশের এলাকার সাধারণ মানুষও যোগ দেন।
গণজমায়েতে সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মৃণাল চৌধুরী বলেন, ‘কালুরঘাটে রেলসহ সড়ক সেতু নির্মাণের দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। সরকার হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে চট্টগ্রামকে নাকি উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিয়ে দিচ্ছে। অথচ চট্টগ্রামের জন্য এই মুহুর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন যে সেতু, চট্টগ্রামের মানুষের উন্নয়নের যে গণদাবি, সেটার দিকে সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।’
তিনি বলেন, ‘কালুরঘাটে রেলসহ সড়ক সেতু নির্মাণের দাবিতে আমরা অক্টোবরে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অফিস সিআরবি ঘেরাও করব। নভেম্বরে বোয়ালখালী উপজেলা থেকে নগরীর বহাদ্দারহাট পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপরও যদি সরকার কোনো উদ্যোগ না নেয় তাহলে সেতু অবরোধ করা হবে। এরপর আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবে সিপিবি।’
গণজমায়েতে সিপিবি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অশোক সাহা বলেন, ‘কালুরঘাট সেতু দিয়ে প্রতিদিন লাখো মানুষ চলাচল করে। এই মানুষগুলো কারা? গরীব, শ্রমজীবী, খেটে খাওয়া মানুষ। সিপিবি বড়লোক, কোটিপতির পার্টি নয়। গরীব-খেটে খাওয়া মানুষের পার্টি। সেজন্য সিপিবি তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এই সরকার লুটেরাদের সরকার। সেজন্য বড় বড় ফ্লাইওভার বানিয়ে আবার কার্পেট দিয়ে ঢেকে দিয়েছে, যেন দেশে রাজাবাদশার আমল চলছে। সরকারকে বলতে চাই, আমরা কালুরঘাটে রেলসহ আধুনিক সড়ক সেতু চাই। প্রয়োজনে জনগণকে নিয়ে কঠোর সংগ্রামের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে।’
গণজমায়েতে আরও বক্তব্য রাখেন- জেলা সিপিবির সহ সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর সিপিবি, জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুন নবী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মছিউদ্দৌলা, কানাই লাল দাশ, অমৃত বড়ুয়া, জামাল আবদুল নাসের, পুলক দাস, স্বপন দত্ত, মো. আলী, বোয়ালখালী শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক শেহাবুদ্দিন সাইফু, যুব ইউনিয়নের নেতা অনুপম বড়ুয়া পারু।
গণজমায়েত শেষে লাল পতাকা নিয়ে মিছিল করে সেতুর পশ্চিম প্রান্ত থেকে পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে বোয়ালখালী-পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের একাংশের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই কালুরঘাট রেলসেতু। একমুখী সেতুটি দিয়ে ট্রেনের পাশাপাশি যানবাহনও চলাচল করে। বৃটিশ আমলে ১৯৩০ সালে নির্মিত সেতুটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে বলে বক্তব্য খোদ রেলওয়ের। সেতুটি ভেঙে নতুন রেলসহ সড়ক সেতু নির্মাণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার পরও সেতু বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ আছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে।