বিজিএমইএ’র উপর ভরসা নেই, পাওনা টাকা নিয়েই ফিরতে চান শ্রমিকরা
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২১:২৮
ঢাকা: পাওনা টাকা আদায়ে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিল একটি পোশাক কারখানার হাজার খানেক শ্রমিক। এতে সকাল থেকে ওই অঞ্চলে যানবাহন চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে। ফলে বিপাকে পড়েন অফিসগামী যাত্রীরা। এ সময় শ্রমিকদের সড়ক থেকে তুলে দিতে বারবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় পুলিশ।
পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পোশাকখাত নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিজিএমইএ’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে যোগাযোগ করেন। এরপর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে মিরপুর-১ নম্বরে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের বিজিএমইএ’র সদস্যরা আশ্বাস দেন যে, তাদের পাওনা টাকা শিগগিরই পরিশোধ করা হবে। তবে বিজিএমইএ’র আশ্বাসে শ্রমিকরা সড়ক ছেড়ে দিলেও ‘জারা জিন্স অ্যান্ড নিট ওয়ার লিমিটেড’র সামনে অবস্থান নিয়েছে। শ্রমিকরা বলছে, বিজিএমইএ’র উপর ভরসা নেই। এ জন্য পাওনা টাকা নিয়েই ঘরে ফিরতে চান তারা।
আন্দোলনকারী শ্রমিকদের মুখপাত্র নুপুর আক্তার মমতাজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিজিএমইএ’র কর্মকর্তারা বহুবার মালিক পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছে। আমাদের আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাই আমরা আর বিজিএমইএ’র উপর ভরসা রাখতে চাই না। তারা কিছুই করতে পারবে না। আমরা পাওনা টাকা নিয়েই ঘরে ফিরতে চাই।’
এদিকে দিন শেষে রাত শুরু হলেও আন্দোলনকারী শ্রমিকরা পাওনা টাকার দাবিতে গার্মেন্টটির সামনে অবস্থান নিয়েছে। আর প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বিজিএমইএ, মালিকপক্ষ ও পুলিশ কর্মকর্তারা বৈঠক করছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৈঠকের কোনো সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। বৈঠকে উপস্থিত আছেন বিজিএমইএ’র পক্ষে মনসুর সিদ্দিক, মালিক রিয়াজুল ইসলাস রাজু ও মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ (এডিসি) কমিশনার রুহুল আমিন সাগরসহ সংশ্লিষ্টরা।
জোসনা আক্তার নামের এক শ্রমিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আজ রাত যতই হোক পাওনা টাকা নিয়ে তবেই যাব। আর কোনো সময় দেওয়া হবে না। আমরা যখন না খেয়ে থাকি তখন কোনো আশ্বাসে পেটের ক্ষুধা মেটে না। প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের খাওয়াতে পারে, তাদের সমস্যা দেখতে পারে। কিন্তু আমাদের বেলায় কেউ নাই।’
এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলেও বিজিএমইএ’র কোনো সদস্য রাজি হননি। তবে পুলিশের এডিসি রুহুল আমিন সাগর সারাবাংলাকে বলেন, ‘বৈঠক এখনও চলছে। মালিককে বলা হয়েছে শ্রমিকদের পাওনা প্রয়োজনে কারখানার মেশিন বিক্রি করে পরিশোধ করে দেয়ার জন্য। সেজন্য বিজিএমইর বিভিন্ন প্রতিনিধি গ্রাহকরা এসে মেশিনগুলো দেখে যাচ্ছে। যাদের কাছে উপযুক্ত দাম পাওয়া যাবে তাদের কাছে বিক্রি করে শ্রমিকদের টাকা দেওয়া হবে।’
তবে আলোচনা শেষে আজই শ্রমিকদের টাকা পরিশোধ করা যাবে কিনা তা এখনও বলা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।