Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রণে আরপিও ভঙ্গ হয় না?— প্রশ্ন রিজভীর


১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৮:৫৭

ঢাকা: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ও ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে সংগঠনটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন তুলেছেন, ‘এতে কি আরপিও ভঙ্গ হয় না?’

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।

রিজভী বলেন, ছাত্রলীগ এর আগে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন থাকলেও নতুন আরপিও অনুযায়ী একে ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। আরপিও অনুযায়ী ছাত্রলীগ স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সংগঠন। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ২৫ (১) ধারা অনুযায়ীও ছাত্রলীগ তাদের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন। এদিক থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ছাত্রলীগকে কোনও আদেশ-নির্দেশ দেওয়া বা তাদের ওপর হস্তক্ষেপ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। তারা কেবল পরামর্শ দেওয়ার অধিকার রাখে।’

‘কিন্তু গত শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে সুস্পস্টভাবে প্রমাণ হয়, নিয়ম-নীতি, বিধি-বিধান, আইন-কানুন সব লঙ্ঘন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যে ঢাকঢোল পিটিয়ে হুমকি-ধমকি দিয়ে ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ করছেন। এতে কি আরপিও ভঙ্গ হয় না?’— প্রশ্ন রিজভীর।

তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের ২৯তম কাউন্সিলের সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ছয় জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন— আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও এনামুল হক শামীম।’

রিজভী বলেন, ‘বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের লক্ষে নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে গত ১৪ সেপ্টেম্বর কাউন্সিল অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছিল। এই কাউন্সিল ও নেতৃত্ব নির্বাচনকে ঘিরে সারাদেশে ছাত্রদলের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। কিন্তু কাউন্সিল অনুষ্ঠানের মাত্র দু’দিন আগে সরকারের আজ্ঞাবহ নিম্ন আদালত থেকে তড়িঘড়ি করে কাউন্সিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে থামিয়ে দেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ না দিয়ে যেভাবে দ্রুততার সঙ্গে রাতের অন্ধকারে আদালতের এই আদেশ বের করা হয়েছে, তা থেকে প্রতীয়মান হয়— এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরকারের সর্বোচ্চ মহল জড়িত। এটা শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক রাজনীতির আরেকটি কলঙ্কজনক ও নজিরবিহীন অধ্যায়।’

তিনি বলেন, ‘এখন যদি কেউ শোভন-রাব্বানীর পদচ্যুতিকে চ্যালেঞ্জ করে ওই একই ঢাকা চতুর্থ সহকারী জজ আদালতে একই ধারায় একটি ঘোষণামূলক মোকদ্দমা দায়ের করে, তবে কি বিএনপির ওপর যেমন শোকজ ও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর একই রকম স্থগিতাদেশ ও শোকজ আদেশ দিতে পারবে?’

রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরের কথা অনুযায়ী তারা যে আরপিও ও দলীয় গঠনতন্ত্র লংঘন করেছেন সেটা বৈধ; আর বিএনপি সব নিয়মনীতি অনুসরণ করেও অপরাধী? আওয়ামী লীগ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও আওয়ামী লীগের সংশোধিত চূড়ান্ত গঠনতন্ত্রের ২৫(১) ধারা লঙ্ঘন করেছে। এখন আদালত বা নির্বাচন কমিশন চুপ কেন? এখন কেন তাদের টনক নড়ে না?’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আমেদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব হাবীব-উন-নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীসহ অন্যরা।

আরপিও ছাত্রলীগ ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রণ রিজভী রুহুল কবির রিজভী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর