Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খালেদাকে জেলে পাঠানো পূর্বপরিকল্পিত : অলি আহমেদ


১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৩:৪৮

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠানো পূর্বপরিকল্পিত ছিল। পূর্বপরিকল্পিত না থাকলে ৬৩২ পৃষ্ঠার রায় কীভাবে ১০ দিনের মধ্যে লেখা হল। ১০ দিনে মধ্যে এটা সম্ভব নয়। বৃহস্পতিবার কেন রায় ঘোষণা করা হল। কারণ শুক্রবার শনিবার তাকে জেলে রাখবে। আমি বলব এটা অবশ্যই পূর্বপরিকল্পিত। কারণ তাকে নির্বাচন থেকে সরাতে চায়।

শনিবার দুপুরে রাজধানীতে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সস্মেলনে দলের চেয়ারম্যান ড. কর্ণেল (অব.) অলি আহমেদ বীর বিক্রম একথা বলেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে কোন গণতন্ত্র নেই। আইনের শাসন নেই। বঙ্গবন্ধুর কথা বলেন, শহীদ জিয়ার কথা বলেন, খালেদা জিয়ার কথা বলেন সবাই গণতন্ত্রের জন্য নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রচেষ্টা করেছেন। সত্যিকার অর্থে বহুদলীয় গণতন্ত্র অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী দ্বারা দেশ শাসন হবে এটা করেছিলেন খালেদা জিয়া।

অলি আহমেদ বলেন, আমরা শুনেছি তাকে কয়েদির কাপড় পরানো হয়েছে, পুরানো একটি জেলে রাখা হয়েছে। এটা কি কারণে করা হল। আমি তো মনে করি এটার সঙ্গে এরশাদের ষড়যন্ত্র আছে। কারণ এরশাদকে নাজিমউদ্দিন রোডে রাখা হয়েছিল। এরশাদ এবং আওয়ামী লীগ এই কাজটা করেছে। তিনি বলেন, একটা পরিত্যক্ত জেলে তাকে নেওয়ার কোন প্রয়োজন ছিল না। সরকার দুইটা নতুন জেল করেছে। কেনারীগঞ্জে আর গাজীপুরে। উনাকে সসম্মানে এখানে রাখতে পারতো। এখানে তো জেল কোডের অবমাননা হত না। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও খালেদা জিয়াকে সামরিক সরকারে আমলে আলাদা সাব জেলে রাখা হয়েছিল। আজকের এই পরিস্থিতির জবাব সরকারকে দিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ১৫ দিন আগে থেকে নাজিমউদ্দিন জেলখানা সংস্কার হল। কেউ জানল না এটা কিভাবে হল। বিএনপির তো এখবর রাখা উচিত ছিল। বৃহস্পতিবার যখন রায়ের তারিখ হল আমার মনে কোন সন্দেহ ছিল না তাকে জেলে নেয়ার জন্য বেছে নেয়া হয়েছে। কারণ শুক্রবার- শনিবার আদালত বন্ধ থাকে। অনেকেই প্রশ্ন করছে জনগণ কেন রাস্তায় আসছে না। অবশ্যই রাস্তায় আসবে। দেশের অবস্থা কিন্তু ভাল না। সবাইকে চোখ কান খোলা রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ৮ তারিখ যখন রায় ঘোষণা হবে তখনই বিএনপির বুঝা উচিত ছিল কি দুরভিসন্ধি ছিল। সে অনুযায়ী রায় রোববার কিংবা সোমবার করার ব্যবস্থা নেয়ার উচিত ছিল। তাহলে আমাদের পক্ষে বা বিএনপির পক্ষে হাইকোর্টে যাওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে এটা কেন করা হল না আমার বোধগম্য নয়।

এলডিপি চেয়ারম্যান বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে রায় হয়েছে সমগ্র জাতির উচিত ন্যায় বিচারের স্বার্থে এটার প্রতিবাদ করা। যে কারণে খালেদা জিয়া তারেক রহমানকে শাস্তি দেয়া হয়েছে, সে শাস্তির কোন প্রয়োজন ছিল না। কারণ যে মামলাটা হয়েছে এখানে কোন অর্থ তসরুপ করা হয় নাই। এর চেয়ে বড় বড় অন্যায় যারা করছে তাদের কোন শাস্তি হচ্ছে না। আগামীতে শাস্তি হবে কিনা জানি না। যে যখন ক্ষমতায় থাকে দুর্নীতির মামলাগুলো প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

তিনি বলেন, দেশে গরীব লোকরা কষ্ট পাচ্ছে। যারা বড়লোক তারা রাজনীতিবিদদের কিনে নেয়। বর্তমানে দেশে যারা লুটপাট করছে, লুটপাটের ব্যবস্থা করছে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। অথচ একজন নিরাপদ বয়স্ক ব্যক্তি, তাকে যেভাবে জেলে নেয়া হল, তা সমগ্র জাতির জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য লজ্জাকর বিষয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, সাবেক সেনাপ্রধানের স্ত্রী হিসেবে, তিনি দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী,সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ৯ মাস তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তিনি যদি ডিভিশন না পান তাহলে বাংলাদেশের আর কে ডিভিশন পাওয়ার যোগ্য। এটার জন্য দরখাস্তের প্রয়োজন পড়ে না। আমরা আশা করবো আগামীকালের মধ্যে বিএনপি বিচারকদের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করবে। পাশাপাশি বিচারকরা এই কেসের মেরিট যাচাই করে, সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে অনিবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিবেন।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে অলি আহমেদ বলেন, বর্তমান সরকার যদি মনে করে ২০২১ সাল দেখবে, ২০৪১ সাল দেখবে বোকার স্বর্গে তারা বসবাস করছে। এলডিপি কোন মুভমেন্টে নাই, তারপরেও গ্রেফতার করা হচ্ছে। আমার চন্দনাইশে আমার দলের ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের হাতে লাঠি ছিল না। তারা বেগম জিয়া আদালতে যাওয়ার সময় সম্মান দেখানো জন্য একত্রিত হয়েছিল। এটা একজন রাজনৈতিক কর্মীর অধিকার। নেতার সঙ্গে থাকা। এটা অপরাধ নয়। তারা ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত ছিল না।

উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা জানি সরকার আপনাদের উপর কঠোর হয়েছে। ডিজিটাল আইনের জন্য আপনাদের গলায় রশি লাগানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ধ্বংসাত্মক কোন কাজই দেশের জন্য মঙ্গলকর নয়। আমরা বিরোধী দলে যারা আছি আমরা বুঝি, সরকারকেও এটা বুঝতে হবে। তাদের মধ্যে এক ধরনের অহংকার কাজ করছে বিরোধীদলকে ধংশ করার জন্য। হাজার হাজার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতর করা হচ্ছে। অহংকার যে করবে তাদের পতন হবেই। ব্যংকগুলো লুটপাট হচ্ছে।দেশে বড় বড় মেগা প্রজেক্ট হচ্ছে, কিন্তু গরীবের পেটে ভাত নেই। কোন কর্মচাঞ্চল্য নেই। এখন বড় বড় মেগাপ্রকল্প হচ্ছে, বড় বড় লোকের পকেটে টাকা যাচ্ছে। আমরা সরকারকে বলবো এই ধরনের কর্মকাণ্ড করলে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা নির্বাচন চাই। আমরা সরকাকে অনুরোধ করবো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের দিকে আমাদের ঠেলে দিবেন না। মিথ্যা মামলায় জড়াবেন না।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল গনি আব্বাসী, আব্দুল গনি, কামাল উদ্দিন মোস্তাফা, সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ।

সারাবাংলা/এইচএ/টিএম

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর