বশেমুরবিপ্রবি ছাত্রীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার দাবিতে মানববন্ধন
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২০:২৭
খুলনা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থী ও ডেইলি সানের বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি ফাতেমা তুজ জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) মানববন্ধন করা হয়েছে। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বশেমুরবিপ্রবিতে কর্মরত সাংবাদিক ফাতেমা তুজ জিনিয়াকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যায়ভাবে সাময়িক বহিষ্কার, জোরপুর্বক সাংবাদিক সমিতি থেকে বহিষ্কার করানো, বিভিন্ন সময়ে অন্যায়ভাবে ৩৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারসহ অন্য সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে হুমকি-ধামকি প্রদান ও সর্বশেষ আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি শামস জেবিনের ওপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
মানববন্ধনে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জিনিয়ার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার ও অন্য সাংবাদিকদের উপর হামলার বিচার করা না হলে সারাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের সমালোচনা করে শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্য ও তার অনুসারীরা জোরপূর্বক জিনিয়ার স্বীকারোক্তি আদায়ে ব্যর্থ হয়ে সাংবাদিক সমিতির কতিপয় নেতাদের বাধ্য করে জিনিয়াকে সমিতি থেকে বহিষ্কার করতে। উপাচার্যের স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করায় শামস জেবিনকে মার খেতে হয়।
তারা আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আটকে শিক্ষার্থীদের জিনিয়ার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করতে বাধ্য করা এবং শামস জেবিনের ওপর হামলার ইন্ধন যোগানোর ফলে উপাচার্য খন্দকার নাসিরউদ্দিন স্বপদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।’
জার্নালিজম ক্লাব খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, ‘সারাদেশের সাংবাদিকরা একটি দেহের মতো। কারও শরীরে একটি অনৈতিক আঁচড়ও বরদাস্ত করা হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ ও শামস জেবিনের ওপর হামলা ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার ইতিহাসে একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। বাংলাদেশ ক্যাম্পাস জার্নালিস্ট ফেডারেশন থেকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের যে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে তা যদি মানা না হয় তাহলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী জি এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এ ঘটনা সাংবাদিকদের মুক্তচিন্তার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ। তিনি বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের স্বৈরাচারী মনোভাবের সমালোচনা করে বলেন, বশেমুরবিপ্রবি প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের গঠনমূলক সমালোচনা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে মেনে নেওয়ার মতো মানসিকতা তৈরি করতে হবে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের এ দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের সকল যৌক্তিক দাবিতে আমাদের সমর্থন রয়েছে। আমরা জিনিয়ার এ বহিষ্কারাদেশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এমন ন্যাক্কারজন ঘটনার প্রতিবাদে সারাদেশের সাংবাদিকতা বিভাগ, ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার সংগঠন ও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠুক।’ এ সময় তিনি অবিলম্বে জিনিয়ার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারেরও দাবি জানান।
মানববন্ধনে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মামুন অর রশিদ, সহকারী অধ্যাপক ছোটন দেবনাথ, প্রভাষক মাজিদুল ইসলাম মিঠু এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।