Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কাটাছেঁড়া ছাড়া হার্টের তৃতীয় অপারেশন সরকারি হাসপাতালে


১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৮:৪৭

ঢাকা: পাঁজরের হাড় না কেটে মিনিমাল ইনভ্যাসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি (এনআইসিভিডি) পদ্ধতিতে হৃদযন্ত্রের তৃতীয় অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে দেশের সরকারি হাসপাতালে। এর আগে প্রথমবারের মতো বুকের হাড় না কেটে ২৫ আগস্ট সফলভাবে হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচার করতে সক্ষম হয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এরই ধারাবাহিকতায় ২ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করা হয়।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সারাবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের এনআইসিভিডি ডা. আশরাফুল হক সিয়াম।

বিজ্ঞাপন

আগের দুবারের মতো জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের এনআইসিভিডি ডা. আশরাফুল হক সিয়ামের নেতৃত্বে পাঁজরের হাড় না কেটে সম্পন্ন করা হয়েছে হৃদযন্ত্রের তৃতীয় এই অস্ত্রোপচার। মাত্র ৫ হাজার টাকায় এই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করা হলো।

আশরাফুল হক সিয়াম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ময়মনসিংহের ৩৫ বছর বয়সী জবা পণ্ডিত হৃদযন্ত্রে ছিদ্র নিয়ে আমাদের সার্জারি ইউনিট-৯ এ ভর্তি হন। আমরা ১৪ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে মিনিমাল ইনভ্যাসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি অপারেশন করি। সফলভাবে অপারেশনের পর মাত্র তিন দিনেই জবা পণ্ডিত সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে এবং বাড়ি চলে যাওয়ার জন্য হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পায়।’

এর আগে এই অপারেশন পদ্ধতি সম্পর্কে ডা. আশরাফুল হক সিয়াম সারাবাংলাকে বলেন, ‘চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটাকে বলা হয় এমআইসিএস। এই পদ্ধতিতে বুক না কেটে ছোট ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচার করা হয়।’

এই চিকিৎসা পদ্ধতির ঝুঁকি সম্পর্কে ডা. সিয়াম বলেন, ‘হৃদরোগের যেকোনো অপারেশনই ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’ বা ঝুঁকি থাকে। কিন্তু প্রচলিত চিকিৎসাপদ্ধতি বা অস্ত্রোপচার পদ্ধতি থেকে এমআইসিএস পদ্ধতিতে ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’ তুলনামূলক কম থাকে। কারণ রক্তক্ষরণ কম হয়, অন্যান্য সংক্রমণের আশঙ্কাও তেমন থাকে না। একইসঙ্গে এই পদ্ধতিতে রোগী খুব দ্রুতই সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং বাড়ি ফিরে যেতে পারেন অস্ত্রোপচারের পরদিনই। সবচেয়ে বড় কথা, এই পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচারে রোগীর আতঙ্ক ও প্রাণের ঝুঁকি— দুটিই কম থাকে। সময় এবং খরচও অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় কম।’

বিজ্ঞাপন

ডা. সিয়াম আরও বলেন, ‘পৃথিবীর উন্নত কিছু দেশের অল্পসংখ্যক হাসপাতালে এই পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের বড় বড় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও এখনো এই পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করা হয় না। কিছু হাসপাতালে পরীক্ষামূলকভাবে হলেও সরকারি হাসপাতালে প্রথমবারের মতো আমরাই এই পদ্ধতিতে অস্ত্রোপাচার করছি। এটি একটি বিশাল সফলতা বলে মনে করি।’

অস্ত্রোপচার বিষয়ে ডা. আশরাফুল হক সিয়াম বলেন, ‘বাংলাদেশে হৃদরোগ চিকিৎসায় প্রচলিত যে পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করা হয়ে থাকে, তাকে বলে ‘কনভেনশনাল হার্ট সার্জারি’। ওই পদ্ধতিতে বুকের মাঝখান বরাবর কেটে অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু এমআইসিএস পদ্ধতিতে এর প্রয়োজন হয় না। একে হৃদযন্ত্রের ল্যাপরোস্কোপি বলা যেতে পারে। খুব অল্পসংখ্যক সার্জনই এই পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করে থাকেন।

বয়স বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যার কারণে যেসব রোগীর জন্য প্রচলিত পদ্ধতিতে হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়, এই পদ্ধতিতে সেসব রোগীকেও অস্ত্রোপচার করা সম্ভব। এতে তাদের অস্ত্রোপচারে ঝুঁকিও কম থাকে।

উল্লেখ্য, ২৫ আগস্ট দেশের কোনো সরকারি হাসপাতালে প্রথমবারের মতো বুকের হাড় না কেটে সফলভাবে হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচার করেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের (এনআইসিভিডি) ডা. আশরাফুল হক সিয়ামের নেতৃত্বে একটি দল। ১২ বছর বয়সী শিশু নুপুরের হৃদযন্ত্রে এই অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২ সেপ্টেম্বর একই পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করা হয় মৌলভীবাজারের ৪০ বছর বয়সী মো. মতিনের।

এনআইসিভিডি কাটাছেঁড়া

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

২ দিনে আয় ২৮৯ কোটি টাকা
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৩২

মৌসুমী হামিদের সংসার যেমন চলছে
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:২৬

সম্পর্কিত খবর