Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এসডিজি প্রতিবেদন: সামাজিক সুরক্ষার সুফল মিলেছে দারিদ্র্য নিরসনে


১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২৩:৫৮

ঢাকা: দারিদ্র্য দূর করার প্রত্যয় নিয়ে সরকারের বহুবিস্তৃত সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুফল মিলতে শুরু করেছে। গত তিন দশক সময়ে দারিদ্র্যের হার ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ২১ দশমিক ৬ শতাংশে। একই সময়ে অতি দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। এর ফলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) প্রথম লক্ষ্য সব জায়গায় সব ধরনের দারিদ্র্যের অবসান অর্জনে যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের এসডিজি অগ্রগতি প্রতিবেদনে এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ১৯৯১-৯২ সালে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০১০ সালে তা কমে হয়েছিল ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ। এখন ২০১৮ সালে এটি আরও কমে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৬ শতাংশে। অন্যদিকে অতি দারিদ্র্যের হার ১৯৯১-৯২ সালে ছিল ৪১ শতাংশ। ২০১০ সালে এসে কমে দাঁড়ায় ১৭ দশমিক ৭ শতাংশে। ২০১৮ সালে তা আরও কমে দাঁড়িয়ে ৯ দশমিক ৪ শতাংশে।

বিজ্ঞাপন

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের জন্য এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ। আগামী ২২ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় এই অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বহুমাত্রিক দারিদ্র্য নিরসনে এরই মধ্যে সরকার বিভিন্ন নীতি ও কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে আছে ত্বরান্বিত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অভিঘাতহীন প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, সামাজিক সুরক্ষার বিস্তৃতি ও কার্যকারিতা বাড়ানো, জেন্ডার সমতা বিধান, ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচির প্রসার, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি আনয়ন এবং স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিবেশ তৈরি করা। বাংলাদেশ এসডিজি-১ অর্জনে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। দারিদ্র্য কমানোর হার এর মধ্যে প্রাধান্য পাবে কর্মসংস্থান তৈরি, সামাজিক সুরক্ষা, মানব পুষ্টি উন্নয়ন, ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নতকরণ এবং বিভিন্ন অভিঘাত কমানো।

এ প্রসঙ্গে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সারাবাংলাকে বলেন, প্রতিদিন ১ দশমিক ৯০ ডলারের নিচে বা জাতীয় দারিদ্র্য রেখার ভিত্তিতে পরিমাপ করা চরম দারিদ্র্য নিরসনে বাংলাদেশের অগ্রগতি কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া সামাজিক সুরক্ষার বিস্তৃতি, সরকারি মোট ব্যয়ের তুলনায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক সুরক্ষায় ব্যয় যথাযথ রয়েছে। সাম্প্রতিক উন্নয়ন অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করা গেলে এবং বর্ধনশীল আয়-বৈষম্য দারিদ্র্য হ্রাসে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রভাবকে কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না করলে দারিদ্র্য নিরসনে ২০২০ সালের মাইলফলক অর্জন সম্ভব হবে।

প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে ১১টিতে অগ্রগতি হয়েছে। ছয়টি লক্ষ্যের ক্ষেত্রে এখনো কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। যেসব লক্ষ্যের ক্ষেত্রে অগ্রগতি ভালো হয়েছে সেগুলো হলো— সবখানে সব ধরনের দারিদ্র্য অবসান, ক্ষুধা অবসান, সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিশ্চিতকরণ, জেন্ডার সমতা অর্জন, সবার জন্য নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন, সবার জন্য আধুনিক জ্বালানি সহজলভ্য করা, অভিঘাত সহনশীল অবকাঠামো নির্মাণ-অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই শিল্পায়নের প্রবর্ধন, অন্তঃ ও আন্তঃদেশীয় অসমতা কমিয়ে আনা, জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাব মোকাবিলায় জরুরি কর্মব্যবস্থা গ্রহণ, সামুদ্রিক সম্পদের টেকসই ব্যবহার এবং বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব উজ্জীবিতকরণ ও বাস্তবায়নের উপায় শক্তিশালী করা।

পাশাপাশি যেসব লক্ষ্য অর্জন অগ্রগতি এখনো পিছিয়ে সেগুলো হলো— সবার জন্য পূর্ণাঙ্গ ও উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান ও শোভন কর্মসুযোগ তৈরি এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক-নিরাপদ-অভিঘাতহীন এবং টেকসই নগর ও জনবসতি গড়ে তোলা, পরিমিত ভোগ ও টেকসই  উৎপাদন ধরন নিশ্চিত করা, জীববৈচিত্র হ্রাস প্রতিরোধ করা এবং শাস্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ব্যবস্থার প্রচলন করা।

এসডিজি এসডিজি অর্জন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য দারিদ্র্য দারিদ্র্য দূরীকরণ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর