Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাউন্টার টেরোরিজম হেফাজতে ইসি’র আরেক কর্মী


১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২১:২৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো: মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কেলেঙ্কারির ঘটনায় মোস্তফা ফারুক নামে একজনকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। গ্রেফতার হওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মী হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোস্তফা ফারুককে ডেকে নিয়েছে তদন্তকারী সংস্থাটি।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মোস্তফা ফারুক এখন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় ‘ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম-২০১৯’ এ যুক্ত আছেন। ভুয়া তথ্য দেওয়া ব্যক্তিকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির অভিযোগে ২০১৬ সালে আউটসোর্সিংয়ের ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া মোস্তফা ফারুককে বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনবছরের মাথায় আবারও একই দায়িত্ব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বিজ্ঞাপন

খোয়া যাওয়া নির্বাচন কমিশনের লাইসেন্স করা ল্যাপটপ ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং এনআইডি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে জয়নালসহ তিনজনকে আটক করা হয়। চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা তাদের আটক করে কোতোয়ালী থানা পুলিশের হাতে দেন। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় খোয়া যাওয়া একটি ল্যাপটও। এরপর রাতেই কোতোয়ালী থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমা বাদী হয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন ও ডিজিটাল আইনে মামলাটি দায়ের করেন।

ওই মামলায় জয়নালকে তিনদিন এবং বাকি দুজনকে একদিন করে হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের অনুমতি পায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।

কাউন্টারে টেরোরিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার মো. শহীদুল্লাহ সারাবাংলাকে জানান, আদালতের রিমান্ড মঞ্জুরের পর জয়নালকে আমরা হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছি। তার কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি।

বিজ্ঞাপন

তবে মোস্তফা ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কোনো কর্মকর্তা মুখ খুলতে রাজি হননি। উপ-কমিশনার মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা মামলা তদন্তের স্বার্থে কয়েকজনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এটি আটক কিংবা গ্রেফতার নয়। শুধুমাত্র জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ডাকা হয়েছে। আগামীকাল (শুক্রবার) মামলা তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের একটি প্রকল্পের অধীনে মোস্তফা ফারুক ২০১৬ সালে কোতোয়ালী থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেসময় হাবিব উল্লাহ সওদাগর নামে এক ব্যক্তিকে নগরীর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড থেকে ভোটার হওয়ার আবেদন করেছিলেন। ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ দেওয়ায় তৎকালীন কোতোয়ালী থানা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ তার আবেদন ফরমটি বাতিল করেন। কিন্তু মোস্তফা ফারুক নিবন্ধন ফরম নম্বর পরিবর্তন করে ওই ব্যক্তিকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেন এবং ওই ব্যক্তি জাতীয় পরিচয়পত্রও সংগ্রহ করেন।

মোস্তফা ফারুকের মতো কর্মচারী অফিসের কাজের জন্য হুমকিস্বরূপ উল্লেখ করে আব্দুল লতিফ শেখ তার বিরুদ্ধে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন দেন। ২৯ জুন এ সংক্রান্ত প্রকল্পের উপ-পরিচালক মো.ইলিয়াস ভূঁইয়া তাকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।

চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.মুনীর হোসাইন খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘২০১৬ সালে শৃঙ্খলাবর্হিভূত কাজের জন্য মোস্তফা ফারুককে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। পরে সে আবারও কাজে যুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু তার আবেদন গ্রহণ করা হয়নি।’

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এই দাবি করলেও তার কার্যালয়ে সংরক্ষিত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ১৭ দিন আগে অর্থাৎ গত ২ সেপ্টেম্বর মোস্তফা ফারুককে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে আউটসোর্সিংয়ের ভিত্তিতে টেকনিক্যাল সাপোর্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর আগেও গত জুন থেকে চলতি মাস পর্যন্ত মোস্তফা কর্ণফুলী, আনোয়ারা. রাঙ্গুনিয়া, রাউজান ও বোয়ালখালী উপজেলায় আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পেয়ে একই দায়িত্ব পালন করেন।

ইসি এনআইডি রোহিঙ্গা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর