এবার আটক যুবলীগ নেতা জি কে শামীম
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৪:১৮
ঢাকা: ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার পর এবার কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। এসময় তার কাছ থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকার এফডিআর চেকসহ বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি টাকা জব্দ করা হয়েছে। শামীমের কাছে একটি অস্ত্রও পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিকেতনের নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। র্যাবের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে র্যাবের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
সূত্র জানায়, সকাল ১১টার দিকে নিকেতনের ৫ নম্বর রোডের ১৩ নম্বর বাসায় জি কে শামীমের জি কে বিল্ডার্সের অফিসে অভিযান শুরু করে র্যাব। পরে দুপুর ১২টার দিকে একই রোডের ১৪৪ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। ওই বাড়িটি শামীমের নিজস্ব। অভিযানের সময় সেখানেই অবস্থান করছিলেন তিনি। তার সঙ্গে তার ছয় দেহরক্ষীকেও আটক করা হয়েছে।
র্যাবের একজন সদস্য জানিয়েছেন, শামীমের অফিস থেকে ১২৫ কোটি টাকার এফডিআর চেকসহ নগদ প্রায় দুই কোটি টাকার দেশি ও বিদেশি নোট জব্দ করা হয়েছে। শামীমের কাছে একটি অস্ত্রও পেয়েছে র্যাব। তবে সেই অস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে কি না, তা এখনো জানা যায়নি।
নাম না প্রকাশের শর্তে একজন র্যাব সদস্য সারাবাংলাকে বলেন, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে র্যাবের অভিযানে গ্রেফতার হওয়া খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ীই জি কে শামীমকে আটকে অভিযান চালানো হয়।
ওই র্যাব সদস্য জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আরও কয়েকজনের নাম বেরিয়ে এসেছে। তাদের ধরতেও অভিযান চালানো হবে। পাশাপাশি বিমানবন্দরকেও অবহিত করা হয়েছে, সন্দেহভাজন এসব নাগরিক যেন দেশ ছাড়তে না পারেন।
পুলিশের গুলশান জোনের উপকমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী নিকেতনে জি কে শামীমের বাসা ও অভিযানের তথ্য স্বীকার করেছেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি তিনি।
জানা যায়, জি কে বিল্ডার্স কোম্পানিটি শামীমের মালিকানাধীন। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বড় বড় সকল টেন্ডারের কাজ পেয়ে থাকে এই কোম্পানি। অন্য কেউ টেন্ডার জমা দিলেও যুবলীগের সম্রাট ও খালেদের হস্তক্ষেপে সমাধান হয়ে যেত। জি কে বিল্ডার্সের টাকার একটি মোটা অংশ খালেদ ও সম্রাটের পকেটে যেত। জি কে বিল্ডার্সের একটি শাখা সিঙ্গাপুরেও রয়েছে, সেখানে বসেন শামীম, সম্রাট, খালেদ। শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানও সেখানে উড়ে যান মাঝে মধ্যেই। টেন্ডার বাগিয়ে নেওয়ার সব পরিকল্পনা করা হয় ওই অফিস থেকেই।
জি কে শামীম ঠিকাদারি জগতের প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত। তিনি যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক। তবে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে শামীম যুবদলের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন বলে জানা যায়। ওই সময়ই তিনি বিএনপি নেতাদের সমর্থনপুষ্ট হিসেবে গণপূর্ত ভবনের ঠিকাদারির নিয়ন্ত্রণে নেন তিনি। যুবদলের সহসম্পাদকের পদেও ছিলেন তিনি।
পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে একসময় যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন শামীম। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগেও তিনি সহসভাপতির পদে রয়েছেন। যদিও যুবলীগের দাবি, কাগজে-কলমে জি কে শামীমের কোনো পদ এই সংগঠনে নেই।