Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাসিনা-মোদি বৈঠকে এনআরসি নিয়ে আলাপ হবে


২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২২:৪৫

ঢাকা: ৭৪তম জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন। জাতিসংঘ সম্মেলনের সাইড লাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলোর পাশাপাশি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ইস্যুতেও দুই প্রধানমন্ত্রী আলাপ করবেন বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমগুলোতে দেখা গেছে, এনআরসি ইস্যুতে ভারতের মন্ত্রী থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিরা প্রতিদিনই মন্তব্য করছেন। তাদের মন্তব্যে বাংলাদশের নামও জড়ানো হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এনআরসি ইস্যুতে দুদেশের মধ্যে এখনই রাজনৈতিক আলোচনা প্রয়োজন। সেইসঙ্গে ভবিষ্যৎ ঝামেলা এড়াতে ঢাকাকে এখন থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর সফর সূচি থেকে জানা গেছে, জাতিসংঘ সম্মেলনের সাইড লাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকটি হবে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলের কেনেডি রুমে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জানান, দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের সব বিষয়ই দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনায় স্থান পাবে। এই বৈঠক ছাড়াও আগামী অক্টোবরে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বি-পক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এনআরসি নিয়ে অনেকের উদ্বেগ রয়েছে। তবে বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীণ। আমাদের উদ্বেগের কারণ নেই। তারপরও বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন।’

এদিকে এনআরসি ইস্যুতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার গত ১২ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) এক ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘না। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগেই জানিয়েছেন যে, বিষয়টি একান্তই ভারতের অভ্যন্তরীণ। তিনি ঢাকা সফরে গিয়েও তাই বলেছেন। এনআরসি একটি জটিল ও দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতই বলে দেবে গোটা এনআরসি প্রক্রিয়া শেষে আসলে কী ঘটবে। তাই ভবিষ্যতে বিষয়টি কীভাবে নিষ্পত্তি হবে তা নিয়ে এখন আলোচনা না করাই ভালো।’

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যখন ঢাকা সফরে এসেছিলেন তখন তাঁর সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ হয়েছে। আপনাদের (গণমাধ্যমকর্মী) সামনেও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে, বিষয়টি একান্তই তাদের অভ্যন্তরীণ। এ বিষয় বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আমি তার এই কথা বিশ্বাস করি।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভারতের মন্ত্রী আমাকে আরও বলেছেন যে, তাদেরকে কখনোই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে না।’

এনআরসি নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাহাব এনাম খান সারাবাংলাকে বলেন, এনআরসি বিষয়টি নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যাওয়ার মতো অবস্থা এখনও আসেনি। তবে যেহেতু ভারত বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র, তাই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনা হওয়া জরুরি। কারণ, এনআরসি ইস্যুতে বাংলাদেশের নাম জড়ানো হচ্ছে। ফলে ভারতের রাজনীতিতে বাংলাদেশ বিদ্বেষী মনোভাব সৃষ্টি হতে পারে। এতে দুই দেশের বাণিজ্য, অর্থনীতিসহ সার্বিক সম্পর্কে প্রভাব পড়বে। তাই বাংলাদেশকে কোনোভাবেই এনআরসি ইস্যু হালকাভাবে নেওয়া ঠিক না।’

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তথ্যানুযায়ী, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তথ্যানুযায়ী, গত ৩১ আগস্ট আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ আবেদনকারীর মধ্যে সেই তালিকায় স্থান পেয়েছেন ৩ কোটি ১১ লাখ নাগরিক। অর্থাৎ প্রায় ১৯ লাখ বসবাসকারী চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। তারা আগামী ১২০ দিনের মধ্যে আপিলের সুযোগ পাবেন।

আরও পড়ুন: এনআরসি নিয়ে ঢাকা-নয়াদিল্লি রাজনৈতিক আলাপ জরুরি

জাতিসংঘ সম্মেলন ঢাকা-নয়াদিল্লি বেঠক হাসিনা-মোদি বৈঠক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর