নিম্নমানের ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছে টিসিবি
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৪:১০
ঢাকা: নিম্নমানের পেঁয়াজ বিক্রি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ’র (টিসিবি) বিরুদ্ধে। খোলাবাজারে ট্রাকে করে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করার কথা থাকলেও ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছে সংস্থাটি।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ক্রেতা এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বললে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
বাজার নিয়ন্ত্রণে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) থেকে স্বল্প পরিসরে রাজধানীর পাঁচটি জায়গায় পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে টিসিবি। জাতীয় প্রেস ক্লাব, দিলকুশা বক চত্বর, খামারবাড়ি, মোহাম্মদপুর এবং মিরপুর এলাকায় ৪৫ টাকা কেজি দরে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারবেন। আর পাঁচটি ট্রাকে প্রতিদিন ৫ হাজার কেজি পেঁয়াজ বিক্রির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে টিসিবি।
এদিন সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টিসিবি’র ট্রাকের (ঢাকা মেট্রো ন: ১১-১৯৪১) সামনে দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। ক্রেতাদের একটি বড় অংশ সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী।
সরকারি পরিবহন পুলের কর্মচারী শফিউল ইসলাম বলেন, দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হবে শুনে পেঁয়াজ কিনতে এসেছিলাম। এখন দেখছি নিম্নমানের ভারতীয় পেঁয়াজ। তারপরও বাজারে তুলনায় দাম অর্ধেক হওয়ায় দুই কেজি পেঁয়াজ কিনলাম।
পেঁয়াজের মান ভালো না হওয়ায় এ সময় বেশ কিছু ক্রেতাদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে ফিরে যেতে দেখা যায়।
ক্রেতাদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিক্রেতা মো. সুমন মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের যে পেঁয়াজ দেওয়া হয়েছে অমরা তাই বিক্রি করছি। এর চেয়ে বেশি কিছু আমরা বলতে পারব না।’
এ প্রসঙ্গে টিসিবি‘র মুখপাত্র হুমায়ন কবির সারাবাংলাকে বলেন, ‘এতদিন দেশি পেয়াজ বিক্রি করা হয়েছে। এখন আমরা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছি। আমাদের জানা মতে পেঁয়াজের মান খারাপ হওয়ার কথা না। তারপরও আমরা খবর নিয়ে দেখব।’
ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন নির্ধারিত জায়াগায় টিসিবি‘র ট্রাক পাওয়া যাচ্ছে না— এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এতদিন ৫টি ট্রাকে পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়েছে। আজ (রোববার) থেকে ১০টি ট্রাকে পেঁয়াজ বিক্রি করা শুরু হয়েছে।
রোববার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা দরে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি।
সূত্র জানায়, ভারতের মহারাষ্ট্রে বন্যার কারণে পেঁয়াজের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যে কারণে ভারত সরকার প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের মিনিমাম এক্সপোর্ট প্রাইজ (এমইপি) নির্ধারণ করে দিয়েছে। আগে প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের আমদানি মূল্য ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ মার্কিন ডলার। গত ১৩ সেপ্টেম্বর তা বাড়িয়ে ৮৫০ মার্কিন ডলার পুনঃনির্ধারণ করে ভারত। এই সিদ্ধান্তের পরে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৫০ টাকা।
যদিও ১৩ সেপ্টেম্বরের পরে নতুন করে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়নি। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট অধিক মুনাফা করতে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি প্রায় ৫০ টাকা বাড়িয়েছে— জানায় সূত্র।
বর্তমান প্রতিবছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৪ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে উৎপাদন হয়েছে ২৩.৭৬ লাখ মেট্রিক টন। ওই অর্থবছরে ১০ থেকে ১১ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছিল। ফলে নতুন করে পেঁয়াজ আমদানির যৌক্তিতা দেখছেন না অর্থনীতিবিদরা।