আবুধাবি থেকে নিউইয়র্কের পথে প্রধানমন্ত্রী
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৯:৫২
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের উদ্দেশে আবুধাবি ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন স্থানীয় সময় বিকেলে সফরসঙ্গীদের নিয়ে নিউইয়র্ক পৌঁছাবেন তিনি।
আট দিনের এই সফরে জাতিসংঘের বার্ষিক অধিবেশনে ভাষণ দেওয়া ছাড়াও সংস্থাটির মহাসচিবের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন তিনি। এছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ আরও কয়েকটি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কথা রয়েছে তার।
আবুধাবিতে একদিনের বিরতি শেষে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে ইতিহাদ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে নিউইয়র্কের পথে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। এদিন নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবেন তিনি।
বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন।
এর আগে শুক্রবার বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে করে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আবুধাবির উদ্দেশে রওনা দেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি
২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে কো-চেয়ার হিসেবে জাতিসংঘ ইকোনমিক অ্যান্ড সোস্যাল কাউন্সিলে (ইসিওএসওসি) ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বহুপাক্ষিক প্যানেল বৈঠক পরিচালনা করবেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী অছি পরিষদে ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ বিষয়ে উচ্চ পর্যয়ের বৈঠকের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ হলে ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটে বক্তৃতা করবেন এবং ‘রিকগনাইজিং পলিটিক্যাল লিডারশিপ ফর ইম্যুনাইজেশন ইন বাংলাদেশ’ বিষয়ক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দফতর (ইউএনএইচকিউ) বুথে জাতিসংঘ মহাসচিবের স্পেশাল অ্যাডভোকেট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স ফর ডেভেলপমেন্ট কুইন মেক্সিমার সঙ্গে বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা। এছাড়া কনফারেন্স রুম ৭-এ গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপ্টেশন আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। তিনি নর্থ ডেলিগেট’স লাউঞ্জে জাতিসংঘ মহাসচিব আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজেও (স্টেট লাঞ্চন) অংশ নেবেন। সদর দফতরে কনফারেন্স রুম ১১-তে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন ও ওআইসি সচিবালয় আয়োজিত মিয়ানামারে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের অবস্থার ওপর একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকেও যোগ দিবেন।
শেখ হাসিনা ইউএনএইচকিউ এর ইসিওএসওসি চেম্বারে ‘লিডারশিপ ম্যাটার্স-রিলেভ্যান্স অব মহাত্মা গান্ধি ইন দ্য কন্টেম্পোরারি ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এছাড়াও তিনি লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
২৫ সেপ্টেম্বর, ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিলে টেকসই উন্নয়নের (এসডিজি সম্মেলন) ওপর উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরামে ‘লোকালাইজিং দ্য এসডিজিস’ এ প্রধানমন্ত্রী কো-মডারেটরের দায়িত্ব পালন করবেন।
বাংলাদেশ প্রধনামন্ত্রী কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসে ‘আ কনভারসেশন উইথ অনারেবল প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ শীর্ষ একটি অনুষ্ঠানেও অংশ নেবেন। একই দিনে লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলে বাইলেটারেল মিটিং রুমে তিনি অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সবার জন্য স্যানিটেশন ও পানির সভাপতি কেভিন রাডের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ হাউজে একটি নৈশভোজে অংশ নেবেন।
২৬ সেপ্টেম্বর লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলের বাইলেটারেল মিটিং রুমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ইক্সোনমোবাইল এলএনজি মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ইনকর্পোরেটেডের চেয়ারম্যান এলেক্স ভি. ভলকোভ, ইউনেস্কোর সাবেক মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ার বিল গেটস এবং আইসিসি প্রোসিকিউটর ফাতোউ বেনসোউদার সঙ্গে বৈঠক করবেন। শেখ হাসিনা একই দিনে লোটে নিউইয়র্ক প্যালেসের হোলমেসে ইউএস চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেবেন। এছাড়াও তিনি ইউনিসেফ হাউসের লাবৌউইস হলে ইউনিসেফ আয়োজিত ‘এক ইভেনিং উইথ প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
২৭ সেপ্টেম্বর, ইউএন সদর দফতরের কনফারেন্স রুম ১-এ শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন আয়োজিত ‘সাইটেইনেবেল ইউনিভার্সেল হেলথ কাভারেজ: কমপ্রেভেনসিভ প্রাইমারি কেয়ার ইনক্লুসিভ অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ডিজ্যাবিলিটিজ’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। একই দিন তিনি জাতিসংঘ সাধারণ সম্মেলনের ৭৪তম বার্ষিক সাধারণ বিতর্কে বক্তৃতা দেবেন। এদিন লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলের কেনেডি রুমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরদিন ২৮ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে প্রেস ব্রিফিং করবেন। ওই তিন তিনি নিউইয়র্কের হোটেল ম্যারিয়ট মারকুইসে বাংলাদেশি কমিউনিটি আয়োজিত একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন। জাতিসংঘ সচিবালয়ে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন। প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিনেশন ও যুব দক্ষতা উন্নয়নে বাংলাদেশের ব্যাপক সাফল্যের জন্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে দু’টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার গ্রহণ করবেন।
২৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ৯টায় বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী ইতিহাদ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে করে নিউইয়র্ক থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন। তিনি আবুধাবি হয়ে ঢাকায় পৌঁছাবেন।
৩০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ৮টায় শেখ হাসিনা আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি বিমানযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন। ১ অক্টোবর ভোরে ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। বাসস।
৭৪তম অধিবেশন জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ অধিবেশন