রাঙ্গামাটিতে কলেজছাত্রীকে অপহরণ— দাবি পরিবারের
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৬:৫৪
রাঙ্গামাটি: পার্বত্য শহর রাঙ্গামাটিতে কলেজ পড়ুয়া এক ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার। এমনকি সংবাদ সম্মেলন করে আজরা আতিকা আনান (১৬) নামের ওই কলেজছাত্রীর সন্ধানও চাওয়া হয়েছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাঙ্গামাটির একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন কলেজ ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা।
নিখোঁজ আনান শহরের ফরেস্ট কলোনি এলাকার দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে। সে রাজধানী ঢাকার লালমাটিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। নিখোঁজের পর গত ১০ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটি কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন তার বাবা। আর নিখোঁজের ১৪ দিন পার হয়ে গেলেও মেয়ের সন্ধান না পেয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- আনানের মা উর্মিলা আলম। এসময় তার বাবা দেলোয়ার হোসেন ও মামা সাইফুল আলম রাশেদ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে উর্মিলা আলম জানান, তারা স্বামী-স্ত্রী দুইজনই সরকারি চাকুরিজীবী। পরিবারে তাদের দুই সন্তান রয়েছে। এর মধ্যে জ্যেষ্ঠ কন্যা আজরা আতিকা আনান। সে ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়ে ঢাকায় লালমাটিয়া মহিলা কলেজে ভর্তি হয়। গেল ঈদুল আজহার ছুটিতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সে রাঙ্গামাটিতে আসে। গত ৮ সেপ্টেম্বর দুপুর দুইটার দিকে আজরা আতিকা আনান প্রাইভেট পড়তে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত সে বাসায় ফিরে না আসায় অনেক খোঁজাখুঁজির পর তারা জানতে পারেন যে, শহরের কাঁঠালতলী এলাকার বখাটে যুবক নিয়াদ খান ও তার বন্ধুরা মিলে আনানকে অপহরণ করেছে। এরপর অনেক খোঁজখুঁজির পরও মেয়ের সন্ধান না পাওয়ায় ১০ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটি কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করে তার বাবা।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে আমরা জানতে পারি, বখাটে নিয়াদ আমার মেয়েকে চট্টগ্রামে নিয়ে যায় এবং ভুয়া জন্ম নিবন্ধন দেখিয়ে আমার অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে বিয়ে করে। পরবর্তী সময়ে নিয়াদ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে বলেও আমরা জানতে পারি। এতে তারা যে অভিযোগগুলো করেছে তা সবই ভুয়া, মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমার মেয়েকে অপহরণের ১৪ দিন অতিবাহিত হয়ে গেল। আমরা এখনও নির্দিষ্টভাবে মেয়ের কোনো সন্ধান পাইনি। সে কার কাছে আছে, কিভাবে আছে কিছুই জানি না।’
উর্মিলা বলেন, ‘২০০০ সালে আমাদের বিয়ে হয়। ২০০৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি আমাদের প্রথম সন্তান আনান জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু বখাটে নিয়াদ ও তার সহযোগীরা আমার মেয়ের জন্ম নিবন্ধনে তার জন্ম দেখান ২০০০ সালে। তারা জন্মনিবন্ধন জাল করে ভুয়া বিয়ে পড়িয়েছে। পরবর্তী সময়ে তারা এ জন্ম নিবন্ধনের কপি বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। আমি আমার মেয়ের সন্ধান চাই। একইসঙ্গে যারা আমার অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে নিয়ে যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের সবার শাস্তি দাবি করছি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময়ে সিএমপি এলাকায় মামলার আসামিদের বাসায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশনের (পিবিআই) সহায়তায় অভিযান চালিয়েছে। কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি, শিগগিরই তাকে উদ্ধার করতে পারব।’