Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিএনপির কর্মসূচি নিবিড় পর্যবেক্ষণে আওয়ামী লীগ


১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৯:৫৮

হাসান আজাদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারে যাওয়ার পর দলটির সকল কর্মসূচি নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে শাসক দল আওয়ামী লীগ। উচ্চ আদালতের বিএনপির আপিল ও রায় পরবর্তী বিএনপির কর্মসূচি দেখে রাজনীতির মাঠে দলীয় কৌশল কী হবে তা নির্ধারণ করবে দলটি।

এদিকে, রায় নিয়ে অপ্রাসঙ্গিক ও বেশি কথা না বলতে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের একাধিক নেতা এসব তথ্য জানান।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাক এ বিষয়ে সারাবাংলাকে বলেন, ‘রায় পরবর্তী বিএনপির কর্মসূচিগুলো আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছি। বেগম জিয়া উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। উচ্চ আদালতের রায় কী হবে এবং রায় পরবর্তী বিএনপির কর্মসূচি দেখার পর পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

বিএনপির এখন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এক-দুইদিনের কর্মসূচি দেখে এই কথা বলা যাবে না। পূর্বে তারা যেভাবে জ্বালাও-পোড়াও করেছে এতে করে সহিংস কর্মসূচি পালন করবে না এটা বলা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির কোনো আন্দোলনের সঙ্গে সাধারণ মানুষ নেই। তাদের সঙ্গে আছে জামায়াত।’

আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, ‘এখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয়েছে তারেক রহমান। যে কিনা দুর্নীতি-সহিংসতার সরাসরি জড়িত। তাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে বিএনপি আবারও প্রমাণ করেছে তারা সুস্থ ও অসহিংস রাজনীতির চিন্তা করতে পারে না।’

যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ এ বিষয়ে সারাবাংলাকে বলেন, ‘রায় পরবর্তী দুইদিনের কর্মসূচি দেখেই বলা যাবে না, তারা সহিংসতার পথ বেছে নেবে না।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া সব-সময় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির কথা বললেও বাস্তবে জ্বালাও-পোড়াও ছাড়া আন্দোলন করতে পারে না। এই কারণে দেশের জনগণ তাকে আগুন সন্ত্রাসের নেত্রী খেতাবও দিয়েছে। এ দেশের মানুষ বিএনপির ধ্বংসযজ্ঞের কথা ভুলে যায়নি।’

হানিফ বলেন, ‘বিএনপির কর্মসূচি এখন আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। অবস্থা বুঝে আমরা কৌশল নির্ধারণ করব।’

এদিকে গত বৃহস্পতিবার বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগে রাজধানীর একটি হোটেলে নির্বাহী কমিটির সভায় রায় পরবর্তী শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে দলের সংকটে সকল নেতা-কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেন। রায়ে জেল জরিমানা হওয়ার পার গত দুইদিন সকল কর্মসূচি অনেকটা শান্তিপূর্ণভাবেই পালন করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। রায়ের আগে কোনো আন্দোলনে সিনিয়র নেতাদের রাজপথে দেখা না গেলেও গত শুক্র ও শনিবার সিনিয়র নেতাদের অনেকেই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলে অংশ নিয়েছেন। যা বিএনপির বিগত আন্দোলনের সঙ্গে মেলে না। এই কারণেই এখনও নতুন কোনো কর্মসূচি না নিয়ে বরং পর্যবেক্ষণে রাখতে চাইছে শাসক দল।

আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, এই মুহূর্তে বিএনপি অসহিংস ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির কথা বললেও বেশিদিন ধরে রাখতে পারবে না। কারণ বিএনপির সঙ্গে রয়েছে জামায়াত। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে জোট হওয়ার পর ধীরে ধীরে জামায়াত দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে কব্জা করে ফেলেছে। এখন বিএনপির চালিকাশক্তি জামায়াত। যে কারণে বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতাকে রাজপথে দেখা যায় না। অনেকে নেতা বিএনপি ছেড়ে দিয়েছেন।

নেতারা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনো ১০/১১ মাস বাকি। খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পরও বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না এমন কথা বলছে না। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরও বেশ কয়েকটি মামলা বিচারাধীন। বিচারাধীন মামলাগুলো আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই রায় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব কারণে খালেদাকে মুক্ত করতে হলে বিএনপিকে ধারাবাহিক আন্দোলনে যেতে হবে। এই ধারাবাহিক আন্দোলন কী ধরনের হবে সেটাও দেখা বিষয়। এ সকল দিক বিবেচনা করেই আওয়ামী লীগ নিজেদের কৌশল নির্ধারণ করবে।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা জানান, খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে বেশি কথা না বলতে দলের সভাপতি নির্দেশ দিয়েছে। এই রায় নিয়ে আমরা এমন কোনো বক্তব্য দেব না যা বিএনপির জন্য সুবিধাজনক হতে পারে। আওয়ামী লীগের অবস্থান হবে, এই মামলা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে হয়েছে। পরে আদালতে বিচার করে রায় দিয়েছে। এখানে আওয়ামী লীগ বা সরকারের কোনো হাত ছিল না। মোট কথা রায় নিয়ে অতিরিক্ত কথা বলা যাবে না।

সারাবাংলা/এইচএ/আইজেকে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর