Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইউএইচসি’র অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে সহায়তার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর


২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১৫

ঢাকা: সার্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচি (ইউএইচসি) অর্জনে অভিন্ন লক্ষ্যের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে সহযোগিতা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা সার্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচি (ইউএইচসি) অর্জনের অভিন্ন লক্ষ্যের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার ভিত্তি।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরের ইকোসোক চেম্বারে ইউএইচসি’র ওপর উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পাশাপাশি ‘মাল্টি স্টেকহোল্ডার প্যানেল’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে কো-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এছাড়াও স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সাঞ্চেজও ‘ইউএইচসি সমতা, অংশীদারিত্বমূলক উন্নয়ন ও সবার জন্য সমৃদ্ধির চালিকাশক্তি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে কো-চেয়ার ছিলেন।

এ সময় শেখ হাসিনা স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে বাংলাদেশের নেওয়া পরিকল্পনার কথা বিশ্ববাসীকে শোনান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে দেওয়া অর্থ সত্যিকারের গরিব মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে; যেন সেই অর্থ ধনীদের আরও ধনী করতে খরচ না হয়।’

২০৩০ সালের মধ্যে ইউএইচসি ও এসডিজিস অর্জনে প্রতিটি দেশের জন্য স্বাস্থ্যসেবা অর্থায়ন কৌশল প্রণয়নে কার্যকর বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে মত দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুবিধার অধীনে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সম্পদের সমাবেশ ঘটাতে আন্তর্জাতিক সহায়তা চান।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘অনেক দেশে ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজের আওতায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাড় করাটাই প্রধান বাধা। আর এই বাধা দূর করার জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইউনিভার্সেল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটসের ক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই পর্যাপ্ত মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা ও ভালভাবে জীবন যাপন করার অধিকার রয়েছে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক বিশ্বাস ও আর্থসামাজিক অবস্থা নির্বিশেষ রোগমুক্ত সুস্বাস্থ্য পাওয়া প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সার্বিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি বলতে দুটি জিনিসকে বুঝায়- প্রথমত, নারী বা পুরুষের সামাজিক পরিচয় নির্বিশেষে প্রত্যেককেই সমান সুযোগ দিতে হবে এবং দ্বিতীয়ত, অভিন্ন সম্পদ ও সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে সকলের সমান অধিকার থাকতে হবে।’

সম্পদের সুষম বণ্টনের ওপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সার্বিক উন্নয়ন না হলে তা অস্থিতিশীলতা ও সামাজিক ঐক্যে বড় ধরনের ভাঙন সৃষ্টি করতে পারে। সম্পদের সুষম বণ্টন না করে শুধুমাত্র প্রবৃদ্ধি বাড়লেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জিত হবে না। সবার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রধান শর্ত।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিটি নাগরিকের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক এখনও প্রয়োজনীয় স্বাস্ব্য সেবা পাচ্ছে না। অতিরিক্ত স্বাস্থ্য ব্যয়ের কারণে প্রতি বছরে প্রায় একশত মিলিয়ন লোক অতি দারিদ্র্য হচ্ছে। প্রায় আটশত মিলিয়ন লোক তাদের পারিবারিক বাজেটের কমপক্ষে দশ শতাংশ ব্যয় করেন স্বাস্থ্য সেবায়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পল্লীর জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সারাদেশে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছি। এ সব ক্লিনিক থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন রোগী স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। এদের মধ্যে ৯০ শতাংশই শিশু ও নারী। আর এভাবেই প্রতি মাসে এসব ক্লিনিকে প্রায় ১০ মিলিয়নেরও বেশি লোককে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচকদের মধ্যে ছিলেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাশেলে, ম্যালেরিয়া নির্মূলে আরবিএম অংশীদারিত্ববিষয়ক বোর্ডের সভাপতি মাহা তাইসির বারাকাত, অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক উইনি বায়ানিমা ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক জেফেরি সাখস।

এ সময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন অটিজম এবং নিউরোডেভলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারবিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোদাচ্ছের আলী।

৭৪তম অধিবেশন জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচি (ইউএইচসি)

বিজ্ঞাপন

মাদকের টাকার জন্য মা'কে খুন
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭

আরো

সম্পর্কিত খবর