পুলিশের সহায়তায় পালায় নেপালের জুয়াড়িরা (ভিডিও)
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:০৬
ঢাকা: রাজধানীর বেশ কয়েকটি ক্লাব ও ভবনে একদিকে যখন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলছে ঠিক তখনই অন্যদিকে সেই ক্যাসিনোর জুয়াড়িদের পালাতে পুলিশ সহায়তা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এই অভিযোগের সূত্র খুঁজে পাওয়া গেছে সেগুনবাগিচা এলাকার একটি ভবনে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরায়। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ওই সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ জব্দ করা হয়েছে বলে র্যাবের একটি সূত্র সারাবাংলাকে জানিয়েছে।
এছাড়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এরই মধ্যে পুলিশের রমনা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওই ভবনটি পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক বলেন, ‘আমরা ভবনটি পরিদর্শন করেছি। বাড়িওয়ালাসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছি। সিসিটিভির ফুটেজে যদি প্রমাণ হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ কেউ জড়িত, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
র্যাব জানায়, সেগুনবাগিচার ৬/সি নম্বর বাসার নাম সামিট হাসান লজ। এই বাসাতেই ভাড়া থাকতেন নেপালের নয় ক্যাসিনো জুয়াড়ি। রাজকুমার, ছোট রাজকুমার থেকে শুরু করে দীনেশ মানালি, হিলমি, প্রদীপসহ সকলে এই বাসাতেই থাকতেন। বাসাটি ঠিক করে দেয় মোহামেডান ক্লাবের কর্মকর্তা মো. মাছুম।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১০টার দিকে কয়েকজন লোক ওয়াকিটকি হাতে বাসার মূল গেট দিয়ে বাসা ঢুকে। এরপর তারা লিফটে করে ভবনের একটি ফ্ল্যাটে যায়। সেখান থেকে তারা রাত সাড়ে ১১টার দিকে বের হয়ে আসে। এ সময় তাদের একজনের হাতে একটি ব্যাগ ছিল। র্যাবের ধারণা ওই ব্যাগে টাকা ছিল। তারা চলে যাওয়ার পর রাত পৌনে দুইটার দিকে একে একে নয় নেপালি বাসাটি ত্যাগ করে। এ সময় তাদের হাতেও বেশ কিছু ব্যাগ দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানান, ওই বাসার ছয় তলার একটি ফ্ল্যাটে ২ মাস ধরে ৪০ হাজার টাকায় ভাড়া থাকতো নেপালিরা। আর নেপালিদের ভাড়া নেওয়ার এই পুরো প্রক্রিয়ায় সহায়তা করেন একজন বাংলাদেশি; যার নাম মাছুম। মাছুম নেপালিদের মোহামেডান ক্লাবের ট্রেইনার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বাসাটি ভাড়া করে দেন।
সেগুন বাগিচার ওই ভবনের নিরাপত্তাকর্মী মামুন বলেন, ‘কিছু লোককে ফ্লাটে যাওয়ার সময় তাদের ঠিকানা দিয়ে যেতে বলেছি। তারা বলেছেন, তোমাদের তো সমস্যা হওয়ার কথা না। বাসায় তো গেস্টও আসে- তাই না।’
ফ্ল্যাট মালিক বলেন, ‘পুলিশ সিভিল ড্রেসে আসছে। এমনকি দারোয়ানকেও ভেতরে নেয়নি। পুলিশ বের হয়ে গেলে ওরা (নেপালিরা) ভোররাতে চলে যায়।’
রমনা থানা পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক সারাবাংলাকে জানান, মোহামেডান ক্লাবের কর্মকর্তা মাছুম থানায় জমা দেওয়া ভাড়াটিয়া তথ্যে নেপালিদের থাকার বিষয়টি গোপন করেছেন। এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নেপালিদের বিষয়ে জানতে সোমবার ইমিগ্রেশন বিভাগে যোগাযোগ করা হলেও কোনো রেসপন্স পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে তারা বাংলাদেশে আছেন নাকি নেপালে চলে গেছেন সেটিও জানা যায়নি। তবে ক্যাসিনোর সাথে জড়িত নেপালিদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।