রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে এবার ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ, যুক্ত হচ্ছে চীন
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২৩:২২
ঢাকা: রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় এবার চীন যুক্ত হয়েছে। এই সংকট সমাধানে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় চীনকে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। আগামী অক্টোবরে এই ত্রিপক্ষীয় কমিটি ফের বৈঠকে বসবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে এখন নিউইয়র্ক সফর করছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখান থেকে জানান, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেইজিংয়ের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি খুবই সফল হয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় চীনকে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৈঠকে।
আরও পড়ুন- ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের মধ্যস্থতায় নিউইয়র্কে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, চীনের প্রস্তাব অনুযায়ী, মাঠ পর্যায়ে ত্রিপক্ষীয় ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করবে। ত্রিপক্ষীয় ওয়ার্কিং গ্রুপের মাঠ পর্যায়ের সংগ্রহ করা তথ্য নিজ নিজ দেশের মন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করবে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী অক্টোবরের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এর আগে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীন একটি বৈঠকের উদ্যোগ নিয়েছে। আসন্ন জাতিসংঘ সম্মেলনের ফাঁকে নিউইয়র্কে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে আমি এবং চীন ও মিয়ানমারের মন্ত্রীরা থাকবেন।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়েই চীনের ওপর আস্থা রেখেছে। চীনের মধ্যস্থতায় এবং উপস্থিতিতে এরই মধ্যে দুই দেশর মধ্যে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ গত ২২ আগস্ট দ্বিতীয়বারের মতো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। এই সংকট কাটাতে চীনের উদ্যোগ চলমান রয়েছে। আগামী ত্রিপক্ষীয় বৈঠকটিও চীনের উদ্যোগেই হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং কানাডার সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা এরই মধ্যে জানিয়েছে যে প্রত্যাবাসনের জন্য কোনো অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেনি মিয়ানমার। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমার সরকার আন্তরিক নয়।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের একাধিক শিবিরে মিয়ানমারের নাগরিক ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে। রাখাইন সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। তুমুল সমালোচনা করছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, কুয়েত, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পুরো বিশ্ব।
চীনের মধ্যস্থতা ত্রিপক্ষীয় বৈঠক রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন রোহিঙ্গা সংকট