Saturday 17 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন র‌্যাগিংয়ের শিকার জাবি ছাত্র


১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৫:৪৪ | আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৮:৩০

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

আশুলিয়া: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) র‌্যাগিংয়ের শিকার হয়ে নবীন শিক্ষার্থীর মানসিক ভারসাম্য হারানোর ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে স্বজনসহ তার পিতা দেখা করতে আসে। তবে ওই শিক্ষার্থী কাউকে চিনতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন তার পিতা।

ভুক্তোভোগী শিক্ষার্থী মো. মিজানুর রাহমান কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১ম বর্ষে সদ্য ভর্তিকৃত।

মিজানুরের বন্ধুরা জানায়, গত শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিভাগের ৪৬ তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা তাদের (৪৭তম আবর্তন) সঙ্গে পরিচিত হওয়ার নামে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। পরে তাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেওয়াসহ শারীরিক নির্যাতন করে। এছাড়া তার বরাদ্দকৃত শহীদ সালাম বরকত হল ছেড়ে আ. ফ. ম. কামালউদ্দিন হলে আসতেও ওই হলের সিনিয়ররা চাপ প্রয়োগ করে। এরপর শনিবার দুপুরে আবারও তাকে বিভাগের সিনিয়ররা হুমকি দিয়েছে বলে জানা যায়।

এ ঘটনার পর মিজানুর শনিবার রাত থেকে হলে বন্ধুদের সাথে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। হলের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা তাকে দেখতে আসলে ‘তুই আমার জীবন শেষ করেছিস, তোরা আমাকে মেরে ফেলবি’ এমন অসংলগ্ন আচরণ করতে থাকে। এমনকি রাতে সে তার বন্ধুদেরকে বলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে ‘শেষ বারের মতো তোরা আমার আব্বার সাথে দেখা করতে দে।’

তার পরিবারকে বিষয়টি জানানো হলে রাতে তার পিতা ও চাচা ক্যাম্পাসে আসে। সাক্ষাতে স্বজনদের মিজানুর চিনতে পারেনি, এমনকি পিতাকেও চিনতে পারেনি সে। ছেলেকে এ অবস্থায় দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে মিজানুরের পিতা।

ঘটনা শুনে হলের সিনিয়র শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। ডাক্তারের কাছে যেতে অস্বীকার করে সে বলে, ‘মায়ের সঙ্গে দেখা করবো, তোরা আমার মায়ের কাছে নিয়ে চল।’ ফলে ডাক্তারের রুমের দরজার সামনে বসিয়ে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। কর্তব্যরত ডাক্তার মানসিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর বিশ্রামের জন্য সাভারে তার চাচার বাসায় নেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

শনিবার চাচা জয়নাল আবেদীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মিজানুরের অবস্থার অবনতি হয়েছে। আমরা তার উন্নত চিকিৎসার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

এদিকে র‌্যাগিংয়ের সাথে জড়িত থাকা সন্দেহে শনিবার রাত ১টার দিকে বিভাগের ৪৬তম আবর্তনের মামুন, হিমেল, সুদীপ্ত ও ক্লাস প্রতিনিধি আনোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এটিএম আতিকুর রহমান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদকালে তারা র‌্যাগিংয়ের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছে। তবে তাদের কথা শুনে যতটুকু বোঝা গেছে তারা র‌্যাগিংয়ের সাথে জড়িত।

কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,আজ রোববার সকালে একাডেমিক বৈঠকে ঘটনার সাথে জড়িতদের আজীবন বহিষ্কারের সুপারিশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমরা আবেদন জানাবো।

ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে।

সারাবাংলা/এসএস/টিএম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর