Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাংবাদিকতায় দৃষ্টান্ত আতাউস সামাদ


২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৭:৫২

ঢাকা: সাংবাদিক আতাউস সামাদ নিরপেক্ষ ছিলেন না। তিনি ছিলেন মানুষের পক্ষে। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় তিনি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এমনই মন্তব্য করেছেন আতাউস সামাদের শিক্ষক ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বরেণ্য সাংবাদিক আতাউস সামাদের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাংবাদিক আতাউস সামাদ স্মৃতি পরিষদ এ স্মরণসভার আয়োজন করে।

আতাউস সামাদের শিক্ষক ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী স্মৃতিচারণ করে বলেন, আতাউস সামাদ আমার ছাত্র ছিল। ছাত্র হলেও তার সাথে আমার সম্পর্কটা ছিল বন্ধুত্বের। বলা হয়, কোনো ছাত্র যদি শিক্ষককে অতিক্রম করে যায়, গুরুমারা বিদ্যা শিখে যায়, তাহলে সেটা শিক্ষকের জন্য গৌরবের বিষয়। আমার জন্যও এটা গৌরাবের ব্যাপার ছিল যে আতাউস সামাদ আমাকে অতিক্রম করে গেছে। বিশেষ করে সাংবাদিকতা বিষয়ে।‘

বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় আতাউস সামাদ দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন উল্লেখ করে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে আমরা যে নিরপেক্ষতার কথা বলি। সেটি সত্য নয়। কোথাও কোনো মানবিক বিষয়ে নিরপেক্ষতা অসম্ভব। সাংবাদিক কোনো যন্ত্র নয়, সাংবাদিক একজন মানুষ। তার পক্ষপাত থাকবে। তবে সেটা হবে বস্তুনিষ্ঠ এবং ন্যায় পরায়নতা। কিন্তু তারপরেও এ কথা থাকবে যে আমরা যারা পাঠক তারা কিন্তু তথাকথিত নিরপেক্ষতা আশা করি না। আমরা মনে করি, সাংবাদিক হবেন জনগণের পক্ষে, মানুষের পক্ষে, তার পক্ষ পাতিত্ব থাকবে। মানুষের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে সাংবাদিক বস্তুনিষ্ঠভাবে লিখবেন। যার দৃষ্টান্ত রেখেছেন সাংবাদিক আতাউস সামাদ।

বিজ্ঞাপন

এ সময় তিনি একটি ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ‘১৯৭০ সালে যে প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড় হয়েছিল। তার খবর বিশ্ব জানতে পারেনি। কেননা এখান থেকে দেওয়া সেটা সম্ভব ছিল না। সেই সময়ে সাংবাদিক আতাউস সামাদ কি দক্ষতায় সংবাদটি পাঠিয়েছিল সেটা লোমহর্ষক। এখান থেকে যেহেতু যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল না। নয়াদিল্লীতে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে আতাউস সামাদ সেটা পাঠিয়েছিল। তার মাধ্যমেই মানুষ জানতে পেরেছে বাংলাদেশে এমন একটি প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেছে।‘

দ্বিতীয় ঘটনা এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময়। ওই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সভা চলছিল। তখন তাকে বলেছিলাম শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তারা পদত্যাগ করবে। আতাউস সামাদ এই খবর সঙ্গে সঙ্গে প্রচার করে দেন। তখন তড়িৎ গতিতে খবরটি ছড়িয়ে পড়ে এবং চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশে জবাবদিহীতা নেই, দায়বদ্ধতা নেই, আমরা দেখি জাতীয় সংসদ কাজ করছে না, আদালতে বিচার পাচ্ছি না। এই ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা যেই সত্য উন্মোচিত করে, সে ডেঙ্গু হোক, কি ক্যাসিনো হোক। এই খবর সাংবাদিকরা যদি না দিতেন তাহলে আমরা জানতে পারতাম না। জবাবদিহীতা যেইটুকু আছে সেইটুকু আসতো না। এ সময় সাংবাদিকদের ঐক্য খুব দরকার ছিল।

আজকে বাংলাদেশে যে ঘটনা ঘটছে ইতিহাসে কখনো এসব ঘটনা ঘটেনি। আজকে শিশু ধর্ষণ হচ্ছে, ধর্ষণের পর হত্যা করা হচ্ছে। মাদকে সয়লাব। এসব থেকে উত্তোরণের জন্য বাংলাদেশে একটা সাংস্কৃতিক জাগরণ দরকার বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, গাজীটিভি ও সারাবাংলা.নেটের এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, নয়াদিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমীন গাজী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল কাদের গণি প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

৭ম মৃত্যুবার্ষিকী আতাউস সামাদ জাতীয় প্রেস ক্লাব স্মরণ সভা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর