Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মঠবাড়িয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ‘গো-বসস্ত’, উদ্বিগ্ন খামারিরা


২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৮:১৮

পিরোজপুর: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় দুই মাস ধরে ‘গো-বসন্ত’ রোগ দেখা দিয়েছে। তবে বর্তমানে এই রোগটি উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন গরুর খামারিরা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর এখন পর্যন্ত ‘গো-বসন্ত’ রোগে সাত/আটটি পশুর মৃত্যুর খবর জানালেও এ সংখ্যা আরও বেশি বলে জানিয়েছেন খামারিরা। এছাড়া রোগটি ছড়িয়ে পড়ায় বাজারে ওষুধের চাহিদা বেড়েছে। তবে চাহিদা অনুযায়ী যোগান না থাকায় খামারিদের অধিক দামে ওষুধ কিনতে হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

Lymphy Skin Disease (LSD), যার বাংলা অর্থ জীব দেহের বর্ণহীন রস চর্ম রোগ। কৃষকদের কাছে ভাইরাসজনিত এই রোগটি ‘গো-বসন্ত’ নামেই পরিচিত। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর জানায়, অনিয়মিত আবহাওয়া অর্থাৎ অতিরিক্ত গরমের পরেই ঠাণ্ডা- এ রকম আবহাওয়ায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। রোগের লক্ষণ হলো গরুর দেহে ১০৪-১০৫ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা, সারাদেহে বড় বড় ফোসকা এবং বুকের নিচ ও পা ফুলে যাওয়া। এক পর্যায়ে ফোসকাগুলো ফেটে গিয়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এ সময় আক্রান্ত গরু খাওয়া-দাওয়া করতে পারে না। গো-বসন্তে আক্রান্ত হলে গরু রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এ সময় সঠিক চিকিৎসা এবং পরিচর্যা না হলে গরু ব্যাকটেরিয়ার কবলে পড়ে মারা যায়।

বিজ্ঞাপন

‘গো-বসন্ত’ রোগে এখন পর্যন্ত কতটি গরু মারা গেছে তার সঠিক তথ্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতরে নেই। তবে সেখানকার ভেটেরিনারি সার্জন ডা. শ্যামল চন্দ্র দাস জানান, রোগটিতে এখন পর্যন্ত সাত/আটটি গরু মারা গেছে। তবে মাঠের চিত্র ভিন্ন বলে জানিয়েছে খামারিরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গো-বসন্ত রোগে সাপলেজা, গুলিশাখালী ও মিরুখালী ইউনিয়নের পশু সব চেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। সাপলেজার খেতাছিরা গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আফজাল বেপারী জানান, হাজিগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক উপেন্দ্রনাথ গোমস্তার বিদেশি জাতের একটি গরু চার/পাঁচ দিন আগে গো-বসন্ত রোগে মারা গেছে।

আফজাল বেপারী আরও জানান, তার নিজের ৬টি গরু গো-বসন্তে আক্রান্ত হলে সেগুলোর চিকিৎসায় প্রায় ১০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। ছোটহারজী গ্রামের লাল মিয়া হাওলাদারের প্রায় ৫০ হাজার টাকা দামের একটি গরু এবং একই গ্রামের মো. শহীদুলের প্রায় ৬৫ হাজার টাকারি একটি গাভী কিছুদিন আগে মারা যায়। এছাড়া বড় শৌলা গ্রামের সন্তোষ মিস্ত্রির দুটি গরু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত তার প্রায় পাঁচ হাজার টাকা ব্যায় হয়েছে। ধার-দেনা ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে গরুর চিকিৎসা চালাতে খামারিদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এদিকে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম থাকায় খামারিদের অধিক দামে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। মিরুখালী বাজারের তালুকদার মেডিকেল হলের মালিক কামাল তালুকদার জানান, ‘কোম্পানিগুলোর সরবরাহ কম থাকায় পাইকারি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ওষুধের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।’

ভেটেরিনারি সার্জন ডা. শ্যামল চন্দ্র দাস জানান, এ রোগের সরাসরি কোনো চিকিৎসা নাই। গরু রোগ প্রতিরোধ শক্তি হারিয়ে অন্য কোনো রোগে যাতে আক্রান্ত হয়ে মারা না যায় সেজন্য ব্যাথানাশক, অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ দেওয়া হয়। রোগটির লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্র দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি।

এদিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. বাবুল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঢাকা ট্রেনিংয়ে ব্যস্ত আছেন বলে জানান। সেজন্য তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে পারেননি।

 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর গুলিশাখালী গো বসন্ত পিরোজপুর মঠবাড়িয়া মিরুখালী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর