কয়েকদিন পর ক্যাসিনো ধামাচাপা দেওয়া হবে: মওদুদ
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৪:৫১
ঢাকা: জি কে শামীম, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, ইসমাইল হোসেন সম্রাটদের পেছনে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী এমপি-মন্ত্রীরা আছেন অভিযোগ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘কয়েকদিন পর ক্যাসিনো ধামাচাপা দিয়ে দেওয়া হবে।’
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এগ্রিকালচারিস্টস্ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এ্যাব) এ মানববন্ধন আয়োজন করে।
মওদুদ বলেন, ‘আজকে যে নৈরাজ্য দেখছেন, প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে যে পতন ঘটেছে- এই পতনের একমাত্র কারণ হলো, দেশে কোনো প্রতিনিধিত্বশীল সরকার নেই। সে কারণে কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ এই সরকারের নেই। তাদের দলের নেতাকর্মীদের দুর্নীতি এমন প্রসার লাভ করেছে যে, এই সরকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে— সেটার প্রমাণ গত দুই সপ্তাহ পেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘শামীম, খালেদ আর সম্রাট— এরা মাত্র তিনটি নাম। এ রকম আরও শত শত নাম আছে। শত শত মানুষ আছে, যুবলীগ আছে, ছাত্রলীগ আছে, যারা চাঁদাবাজি করে, ব্যবসা করে, ক্যাসিনো চালায় এবং জুয়ার আসর বসায়। এরা কারা? তারা তো এই দলেরই নেতৃবৃন্দ।’
‘কেবল ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক শোভন আর রাব্বানী নয়, ছাত্রলীগের মধ্যে এই ধরনের শোভন রাব্বানী অনেক রয়েছে। একজন ছাত্রনেতা ৮৬ কোটি টাকা চাঁদাবাজি করবে, এ তো আমি কল্পনাই করতে পারি না’— বলেন ব্যারিস্টার মওদুদ।
দুর্নীতি বাংলাদেশের সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের সর্বস্তরের তো বটেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ জন উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে তিনজনের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়েছে। একটি হল আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নিজ জেলা গোপালগঞ্জের। তাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়েছে এবং আন্দোলন চলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলছে।’
মওদুদ আহমদ বলেন, ‘জজ সাহেবদের অত্যন্ত সম্মান করতাম আমরা। আজকে দেখা যাচ্ছে আদালতের সর্বত্র দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। সেই জন্য আমি মনে করি, অবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই সরকার পদত্যাগ করে দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেবে। সেই নির্বাচনে জনগণের ভোটে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেই এই নৈরাজ্য দূর হবে, এই চাঁদাবাজি দূর হবে, এই জুয়াড়ি দূর হবে, এই ক্যাসিনো দূর হবে।’
‘এছাড়া এই সরকারের পক্ষে দলীয় লোকদের দুর্নীতি দূর করা সম্ভব হবে না। আজকে হয়তো খবরের কাগজে খুব ভাল করে ছাপানো হচ্ছে। দেখবেন কয়েকদিন পরে এইগুলো ধামাচাপা দিয়ে দেওয়া হবে। এদের সঙ্গে যেসব এমপি-মন্ত্রী জড়িত, তাদের প্রভাবে এদের শেষ পর্যন্ত কিছুই হবে না’— বলেন বিএনপির এই নীতিনির্ধারক।
তিনি বলেন, ‘এই অবস্থার প্রেক্ষাপটে সব চাইতে বেশি প্রয়োজন দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তিনি এক বছর ৭ মাস জেলখানায় আছেন। জামিন তার হয় না। আইনের আওতার মধ্যে রেখে তাকে মুক্ত করা সম্ভব হবে না। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। কোনো আদালতে খালেদা জিয়ার জন্য সুসংবাদ নাই। কারণ, তারা সমস্ত আদালতকে প্রভাবিত করেছে। সেজন্য রাজপথই একমাত্র পথ। সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনের মাধ্যমেই বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি রাশেদুল হাসান হারুনের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, পেশাজীবী নেতা রিয়াজুল ইসলাম রিজু, শামসুল ইসলাম তোফা, শামিমুর রহমান শামীম প্রমুখ।
ক্যাসিনো খালেদা জিয়া জি কে শামীম টপ নিউজ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ