সন্ত্রাস-চরমপন্থায় জিরো টলারেন্স পুনর্ব্যক্ত করলেন হাসিনা-মোদি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৫৫
ঢাকা: সন্ত্রাস ও চরমপন্থা ইস্যুতে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জিরো টলারেন্সের বার্তা পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সময় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে বাংলাদেশ সফরের জন্য নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানান শেখ হাসিনা।
চলমান জাতিসংঘ অধিবেশনের সাইড লাইনে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাতে নিউইয়র্কে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে ভারতের নিউইয়র্ক মিশন জানিয়েছে, দুই মন্ত্রীর মধ্যে আন্তরিক পরিবেশে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিপক্ষিক সম্পর্কের সবগুলো বিষয় নিয়েই দুই প্রধানমন্ত্রী আলাপ করেন এবং ভবিষ্যতে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও নতুন মাত্রায় উন্নীত করতে অঙ্গীকার করেন।
শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বার ও নরেন্দ্র মোদি টানা দ্বিতীয়বার নিজ নিজ দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম কোনো দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসলেন। এসময় মোদি দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় শেখ হাসিনা তাকে অভিনন্দন জানান।
সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের বার্তা বৈঠকে পুনর্ব্যক্ত করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক বিরাজ করায় নিরাপত্তা ও অন্যান্য স্বার্থসংশ্লিষ্ট খাতগুলোতে আস্থার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে বলে বৈঠকে দুই প্রধানমন্ত্রী একমত পোষণ করেন। দুই দেশের সম্পর্কে স্থল, নদী ও আকাশ যোগাযোগে উন্নতি, জ্বালানি খাতে দৃষ্টান্তস্বরূপ অগ্রগতি এবং বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক খাতের উন্নয়ন এই অঞ্চলের শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে অবদান রাখছে বলেও দুই প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে একমত পোষণ করেন। এসময় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হিসেবে গড়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেন মোদি।
অর্থনীতিতে রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়ন নিশ্চিত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বৈঠকে সাধুবাদ জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন নিশ্চিতে ভারত সব সময় পাশে থাকবে। দ্বিপক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক একাধিক বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ নরেন্দ্র মোদি। তিনি এসময় ন্যায়বিচার ও মানবতার পক্ষে বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ সংগ্রাম এবং সাধারণ মানুষের প্রতি তার শ্রদ্ধার কথাও গভীরভাবে স্মরণ করেন মোদি। উন্নত নৈতিক মূল্যবোধের কারণে বঙ্গবন্ধু মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম উচ্চ আসনে আসীন একজন নেতা বলেও মন্তব্য করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম ও আদর্শ তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে। এজন্য তার জীবন ও কর্মকে আরও ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতি নরেন্দ্র মোদি যে মনোভাব দেখিয়েছেন, তার প্রশংসা করেন তিনি।
বাংলাদেশ সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানান। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরামর্শ দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বলেন, সামনে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী সফরের জন্য উত্তম সময় হতে পারে। শেখ হাসিনার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে নরেন্দ্র মোদি মন্তব্য করেন, ঐতিহাসিক এই দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে যুগপৎভাবে কাজ করবে।
বৈঠকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক খান, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হাসিনা-মোদি বৈঠক