নোয়াখালীতে স্পিরিট পানে ৬ জনের মৃত্যু, বাবা-ছেলে আটক
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:০০
ঢাকা: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে স্পিরিট পান করে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পান বাজার সংলগ্ন রফিক হোমিও হলের স্পিরিট পান করে তাদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় স্পিরিট বিক্রেতা ‘হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক’ সৈয়দ জায়েদ উল্লাহ (৬৫) ও তার ছেলে সৈয়দ মিজানুর রহমান প্রিয়মকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ।
মৃতরা হলেন উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের বাঁশ ব্যাপারী বাড়ির নূর নবী মানিক (৫০), একই এলাকার ক্ষিরত মহাজন বাড়ির অনীল রায়ের ছেলে রবি লাল রায় (৫৫), মোহাম্মদনগর গ্রামের ফয়েজ আহমদের ছেলে মহিন উদ্দিন (৪০), চর কাঁকড়া ইউয়িনের ৪ নং ওয়ার্ডের আবদুল আজিজের ছেলে আবদুল খালেক (৫৮), সিরাজপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মতলব মিয়ার বাড়ি সংলগ্ন রইসুল হকের ছেলে মো. সবুজ (৬০)।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় বসুরহাট পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের কাশেম ব্যাপারী বাড়ির আবদুর রহমানের ছেলে ওমর ফারুক লিটন (৫৫) মারা যান। তবে অসুস্থ পাঁচজনের নাম শোনা গেলেও একজনের পরিচয় মিলেছে।
তিনি হচ্ছেন চর কাঁকড়া ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. মোস্তফার ছেলে মোজাম্মেল হোসেন দুলাল (৫৫)। তিনি ফেনীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি চারজনের নাম ও পরিচয় জানা যায়নি।
এদিকে শনিবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ ও কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ রফিক হোমিও হলে অভিযান চালায়। এ সময় ৬০০ বোতল স্পিরিট জব্দ করা হয় এবং দোকানটি সিলগালা করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেনীর দাগনভূঁইয়া উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের সৈয়দ জায়েদ উল্যাহ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার আড়ালে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। দীর্ঘদিন থেকে তিনি নেশা জাতীয় দ্রব্য ও রেকটিফাইড স্পিরিট বিক্রি করে আসছেন। ওই দোকানে তার ছেলেও বেচাকেনা করতেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান জানান, স্পিরিট বিক্রেতা ডা. জায়েদ এর ছেলে প্রিয়মকে রাতে আটক করা হয়েছে। রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন-অপারেশন) দীপক জ্যোতি খীসা কোম্পানীগঞ্জ থানা পরিদর্শনে আসেন। ভোর রাতে তার নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক সৈয়দ জায়েদ উল্লাহকে ফেনীর দাগনভূঁইয়া থেকে আটক করা হয়।
এদিকে শনিবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিসেট্রট ফয়সাল আহমেদ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ নিয়ে হোমিপ্যাথিক চিকিৎসক সৈয়দ জায়েদ উল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে রফিক হোমিও হলে তল্লাশি চালান। এ সময় ৬০০ বোতল স্পিরিট জব্দ করা হয় ও দোকানটি সিলগালা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ বলেন, চিকিৎসক হিসেবে জায়েদের কোনো সনদ ছিল না। এ ছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্সেরও কোনো মেয়াদ ছিল না। তাই দোকানটি সিলগালা করা দেওয়া হয়েছে। জব্দ করা স্পিরিট পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে।