কুবিতে পরীক্ষার উত্তরপত্রে সংকট!
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৩:১০
ঢাকা: ‘গত ২৬ সেপ্টেম্বর আমাদের মিডটার্ম পরীক্ষা ছিল। কিন্তু পরীক্ষা দিতে গিয়ে শুনতে পাই যে বিভাগে মিডটার্মের উত্তরপত্র নেই। পরবর্তীতে আমরা দোকান থেকে কাগজ কিনে পরীক্ষা দিয়েছি।’ এমনটাই বলছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) মার্কেটিং বিভাগের ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
শুধু মার্কেটিং বিভাগেই নয় বেশ কয়েকটি বিভাগেই পরীক্ষার উত্তরপত্রের সংকটের কারণে নিয়মিত পরীক্ষাগুলো নিতে সমস্যায় পড়ছে বলে জানা যায়। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে বিভাগগুলোর চাহিদা অনুযায়ী উত্তরপত্র না পাওয়ার কারণেই এমনটি ঘটছে বলে জানান বিভাগগুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, বেশ কয়েকদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দফতরে মিডটার্ম পরীক্ষার উত্তরপত্রের সংকট রয়েছে। বিভাগগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী উত্তরপত্র সরবরাহ করা হয় না বলে জানান বেশ কয়েকটি বিভাগের শিক্ষক। তাদের অভিযোগ প্রায় প্রতিটি বিভাগেই ছয়টি করে ব্যাচ চলমান। তাদের এক সেমিস্টারেই কমপক্ষে ৩ হাজার ৬০০ উত্তরপত্র দরকার শুধু মিডটার্ম পরীক্ষা নেওয়ার জন্য। কিন্তু এ উত্তরপত্র দেওয়া হয় ২০০টি, ৫০০টি করে। যা নিয়মিত পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে। যার ফলে বাড়ে সেমিস্টারের সময়কাল। এর পরিণতিতে বিভাগগুলোকে পড়তে হয় সেশনজটে।
আইসিটি বিভাগের এক শিক্ষক বলেন, ‘আমাদের বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) একটি ব্যাচের মিডটার্ম পরীক্ষা ছিল কিন্তু উত্তরপত্রের অভাবে পরীক্ষাটি নিতে পারিনি। এমনিই আমাদের ক্লাসরুম সংকট তার মধ্যে আবার নিয়মিত পরীক্ষাগুলো নেওয়ায় এমন সমস্যা হচ্ছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভিন্ন বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষক জানান, তাদের বিভাগ থেকে বিভিন্ন ব্যাচের পরীক্ষার উত্তরপত্রের চাহিদা দেওয়া হলেও তারা সময়মতো তা পাচ্ছে না। যার ফলে তাদের নিয়মিত মিডটার্ম পরীক্ষাগুলো নিতে অসুবিধা হচ্ছে। যা সেমিস্টার পরীক্ষায় প্রভাব ফেলে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. শামিমুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বেশ কয়েকদিন ধরে শুনছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তরপত্র সংকট রয়েছে। নতুন উত্তরপত্র ক্রয়-প্রক্রিয়া নিয়ে একটু সমস্যা হওয়ায় সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। তাই বিভাগগুলো চাহিদা অনুযায়ী উত্তরপত্র পাচ্ছে না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নূরুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘নতুন অর্থবছরের জন্য বরাদ্দ উত্তরপত্র আমরা এখনও পাইনি। শুনেছি উত্তরপত্র ক্রয়ের টেন্ডার নিয়ে কোনো একটা সমস্যা হয়েছে। আমরা সাময়িক এ সমস্যা সমাধানের জন্য মিডটার্মের উত্তরপত্র আমরাই মুদ্রণ করে বিভাগগুলোতে সরবরাহ করি। তাই তাদের চাহিদা অনুযায়ী উত্তরপত্র দিতে পারছি না। তবে আমরা চেষ্টা করি যেন কোনো পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে সমস্যা না হয়।’
এদিকে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ক্রয়কৃত উত্তরপত্র অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। নতুন অর্থ বছরের (২০১৯-২০) তিন মাস অতিবাহিত হলেও এখনও ক্রয় করা হয়নি বিভিন্ন পরীক্ষার উত্তরপত্র। জানা যায়, উত্তরপত্র ক্রয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি। কোনো এক সমস্যার কারণে এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে সময় লাগছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমাদের উত্তরপত্র সংকট রয়েছে। উত্তরপত্র ক্রয়ের টেন্ডার হয়েছিল সেখানে একটু সমস্যা হওয়ায় যার পুনরায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি আগামী ২/৩ দিনের মধ্যেই দেওয়া হবে। সাময়িক সমস্যা কাটাতে প্রতি সপ্তাহে ২৫ হাজার করে উত্তরপত্র এনে তা সরবরাহ করা হয়।’