‘পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ খুঁজতে মাঠে নামছে মনিটরিং টিম’
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৫:১৭
ঢাকা: বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ খুঁজতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রধান করে দশটি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে এসব টিম বাজার পর্যবেক্ষন করবে। একই সঙ্গে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) থেকে ট্রেড করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি’র মাধ্যমে খোলা বাজারে বিক্রির জন্য ট্রাকের সংখ্যাও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান তিনি।
সচিব বলেন, বাজারে যথেষ্ঠ পরিমাণ পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে। অন্যদিকে আমদানিও হচ্ছে। তারপরেও হঠাৎ করেই অস্বাভাবিকভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ খতিয়ে দেখতে মনিটরিং টিম গঠন করে দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় ও এর অধিনস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রধান করে দশটি টিম গঠন করা হয়েছে। মনিটরিং টিমগুলো পেঁয়াজের উৎপাদনস্থল পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষন করবে।’
একইসঙ্গে টিসিবির ১৬ টি ট্রাক রাজধানীতে খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। তা মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) থেকে বাড়িয়ে ৩৫টি করা হচ্ছে। অর্থাৎ ১ অক্টোবর থেকে টিসিবির ৩৫ টি ট্রাক খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করবে। এসব ট্রাকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। যোগ করেন বাণিজ্য সচিব।
বাণিজ্য সচিব বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ রফতারি বন্ধের ঘোষণায় কোথাও কোথাও ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেয়ে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে এমন তথ্যও মন্ত্রণালয়ে এসেছে। সেদিকেও কাজ করবে মনিটরিং টিম। যদি কোনো অসাধু ব্যবসায়ী এই পেঁয়াজ মজুদ রেখে দাম বাড়িয়ে জনগনকে জিম্মি করেন, তবে তার জন্য আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা বন্ধ হলেও পেঁয়াজের চাহিদা মেটাতে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা দুই জাহাজ পেঁয়াজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব। তিনি বলেন, পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে মিয়ানমার থেকে যে পেঁয়াজের জাহাজ চট্টগ্রামে নোঙড় করেছে তা দ্রুতই বাজারে পৌঁছে যাবে। তখন সরবরাহ কমের অজুহাত দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। ফলে দাম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে। এছাড়া তুরস্ক ও মিশর থেকেও পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। যা ধাপে ধাপে বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের পরিমাণ ২৩ লাখ মেট্রিক টন। আর তার বিপরীতে চাহিদা ২৪ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন ও চাহিদার ফারাক বেশি না হলেও উৎপাদিত পেঁয়াজের একটা অংশ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পঁচে যায়। ফলে প্রায় ৩০ শতাংশের চাহিদা ভারত থেকে মেটাতে হয়।
বাণিজ্য সচিব জানান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে একটা স্থায়ী সমাধানে যাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। যাতে পেঁয়াজের উৎপাদন আরো বাড়ানো যায় এবং নিজেদের উৎপাদিত পেঁয়াজ থেকেই চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৩ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রফতানিতে টনপ্রতি ন্যূনতম দাম ৮৫০ ডলারে বেঁধে দেয় ভারত সরকার। এরপর থেকেই বেশি মূল্যে পেঁয়াজ আমদানি করে আসছে হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা। ফলে তখন থেকে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। সর্বশেষ গতকাল শনিবার পেঁয়াজের উৎপাদন সংকট দেখিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। আর এর প্রভাব পড়েছে পাইকারি ও খোলা বাজারে।