‘অভিজ্ঞতা না থাকলে প্রকল্পের টাকা মিসইউজ হয়, কমাতে চেষ্টা করছি’
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৮:০২
ঢাকা: মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা না থাকায় এসব প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ টাকা ‘মিসইউজ’ হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে ধীরে ধীরে এমন ‘মিসইউজে’র পরিমাণ কমিয়ে আনতে সরকার চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি মিসইউজের পরিমাণ কিভাবে কমানো যায়, সীমার বাইরে না যায়। প্রধানমন্ত্রীও আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন, যেন এটা সীমার মধ্যে থাকে। এতেই আমরা খুশি। ধীরে ধীরে আমরা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করব। তখন এগুলো (মিসইউজের পরিমাণ) কমে আসবে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অর্থমন্ত্রীর দফতরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত রেনজে তেরিংকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখানে পদ্মাসেতু করব, কর্ণফুলি টানেল করব, আমাদের এমআরটি (মেট্রোরেল) প্রজেক্ট করব— এগুলো তো স্বপ্ন। এখানে বাস্তবায়নের বাস্তব অভিজ্ঞতা কারও ছিল না। সুতরাং এখানে কিছুটা মিসইউজ হতে পারে। এটাকে ধরে নিয়েই কাজ করতে হবে। এরকম মিসইউজ ইন্দোনেশিয়ায় হয়েছে, মালয়েশিয়ায় হয়েছে এবং অন্যান্য দেশেও হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘যত দিন যাবে, ততই অভিজ্ঞতা বাড়বে। তখন আরও বেশি বেশি ঠিকাদারদের অভিজ্ঞতা হবে। যেখানে আমরা পারব না, সেখানে আমরা বিদেশি ঠিকাদার নিয়ে নিচ্ছি। আমরা জাইকাকে দিয়ে কাজ করাচ্ছি, বড় বড় চাইনিজ কোম্পানিকে দিয়ে কাজ করাচ্ছি।’
বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি না হলে বাংলাদেশ আরও আগেই এগিয়ে যেত— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মুস্তফা কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিকে যেভাবে দেখছেন, তার সহযোগী হিসাবে আমিও একইভাবে দেখছি। উনি যা বলেছেন, সত্যিই বলেছেন। এটা স্বীকার করতে হবে।
তিনি বলেন, যে পরিমাণ বিনিয়োগ আমরা করছি, শতভাগ মানসম্পন্নভাবে করতে পারছি না। সেখানে আমাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে। এতে করে আমাদের প্রবৃদ্ধি কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, তিনি উদ্যোগ নিয়েছেন। যেখানে আমরা পাঁচ বছর পরে যেতাম, সেখানে এখন তিন বছরে পৌঁছে যেতে পারব।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে ইইউ রাষ্ট্রদূত রেনজে তেরিংক রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, রোহিঙ্গাদের রাখাইন রাজ্যে ফিরে যাওয়া দরকার। এ ব্যাপারে আমরা ভূমিকা রাখব। সারাবিশ্বকে একসঙ্গে নিয়ে আমরা যেন রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারি, সে বিষয়ে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তেরিং আশঙ্কা জানান, আগামীতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে। অর্থমন্ত্রী তার এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমবে না, বাড়বে।
মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন খাতে আমরা বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু সেগুলো থেকে আমরা এখনও ফল পাইনি। এগুলো থেকে রিটার্ন আসতে শুরু করবে আগামী বছর থেকে। রিটার্ন পেতে শুরু করলে প্রবৃদ্ধি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ২ শতাংশ বেড়ে যাবে। শুধু পদ্মাসেতুই ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করবে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রকল্প বরাদ্দ প্রকল্পের টাকা মিসইউজ মিসইউজ