কর্ণফুলী দূষণের দায়ে এস আলম গ্রুপকে পরিবেশ অধিদফতরের নোটিশ
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৯:৪৮
ঢাকা: কারখানা থেকে তরল বর্জ্য ফেলে কর্ণফুলী নদীর পানি দূষিত করছে দেশের অন্যতম বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ। পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের পরিদর্শনে এর প্রমাণ মিলেছে। এ কারণে এস আলম কর্তৃপক্ষকে শুনানিতে হাজির হওয়ার নোটিশ দিয়েছে পরিবেশ অধিদফতর। তবে এস আলম সময় চেয়েছে।
গত ১১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগরে এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-১-এর কারখানায় পরিদর্শনে যান পরিবেশ অধিদফতর, চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরীর নেতৃত্বে একটি টিম। কারখানা সংলগ্ন কর্ণফুলী নদী থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে অধিদফতরের ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। পরে পরিদর্শন টিমের পক্ষ থেকে পরিচালকের কাছে একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
পরিবেশ অধিদফতর, চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. মোয়াজ্জেম হোসাইন সারাবাংলাকে বলেন, ‘পরিদর্শনে এস আলম কারখানায় পূর্ণমাত্রার উৎপাদন দেখা গেছে। তবে তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) বন্ধ পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, কারখানা থেকে বর্জ্য পরিশোধন না করে সরাসরি ফেলে দেওয়া হচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে। নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করে আমরা তরল বর্জ্য নদীর পানিতে মেশার প্রমাণ পেয়েছি। এর ফলে নদীর জীববৈচিত্র্যকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলা হয়েছে।’
পরিদর্শনের পর গত ১২ সেপ্টেম্বর পরিবেশ অধিদফতরে ৩০ সেপ্টেম্বর নদীর পানি দূষণের ওপর শুনানিতে হাজির থাকার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছিল সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষকে। তবে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) কারখানার প্রতিনিধি সময়ের আবেদন করেন।
মোয়াজ্জেম হোসাইন সারাবাংলাকে বলেন, ‘তারা বলছে চেয়ারম্যান ও এমডি বিদেশে আছেন। সেজন্য একমাস সময় প্রয়োজন। আমরা বলেছি, সময় নেন। তবে আপনারা স্বনামধন্য শিল্প গ্রুপ। আপনারা কর্ণফুলীর মতো একটা জাতীয় সম্পদে বর্জ্য ফেলবেন, এটা কাম্য নয়। ইটিপি আপনাদের অবশ্যই চালাতে হবে। তারা যে বর্জ্য নদীতে ফেলছে তার স্টিল ছবি ও ভিডিও আমাদের কাছে আছে, সেটাও জানিয়েছি।’
কারখানা কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ৩০ অক্টোবর শুনানির সময় পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদফতরের এই কর্মকর্তা।
এর আগে, ২০১৪ সালের এপ্রিলে পরিবেশ দূষণের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করে পরিবেশ অধিদফতর। কারখানাগুলোর মধ্যে এস আলম রিফাইন্ড সুগার মিলস লিমিটেডকে এক কোটি ৮০ লাখ ৪০ হাজার টাকা, এস আলম স্টিল মিলস ও চেমন ইস্পাত লিমিটেডকে ৩৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬০০ টাকা, এস আলম ভেজিটেবলকে এক লাখ চার হাজার টাকা এবং এস আলম কোল্ড রোল স্টিল মিলসকে ২২ লাখ ৪৬ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করা হয়।