পদ্মা ফুঁসছে, হুমকির মুখে রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধ
২ অক্টোবর ২০১৯ ১৫:১৩
রাজশাহী: বর্ষাকাল শেষে রাজশাহীর পদ্মায় হুহু করে বাড়ছে পানি। প্রমত্ত পদ্মার ঢেউ দুইপাশে আছড়ে পড়ছে। এ ঢেউয়ে ভাঙছে যেমন পার, তেমনি তলিয়ে গেছে চরবাসীর ঘর-বাড়িসহ বিশাল বিশাল চর। এরই মধ্যে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে চরের মানুষরা গরু-ছাগল নিয়ে ছুটতে শুরু করেছেন। ডুবে গেছে হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি। নদীতে পানি বাড়ায় রাজশাহীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। আশপাশের এলাকায় আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে উঠছে মানুষ।
রাজশাহী পয়েন্টে পদ্মার পানি প্রতি মুহূর্তেই বাড়ছে। বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয় নদীর পানি। আর মাত্র দুই মিটার পানি বাড়লেই বিপৎসীমা ১৮.৫০ মিটার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারনা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এদিকে পদ্মার পানি বৃদ্ধিতে হুমকির মুখে পড়েছে রাজশাহীর টি বাঁধ। বাঁধ রক্ষায় ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ। তবে ধেয়ে আসা পানির প্রবল স্রোতে হুমকির মুখে পড়েছে শহররক্ষা বাঁধটি। এই বাঁধটি রক্ষায় ৫০০ বস্তা জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ লাইনের সামনের বাঁধ রক্ষায় ফেলা হচ্ছে আরও দুই হাজার বস্তা জিও ব্যাগ। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। চরাঞ্চলের মানুষ উদ্বেগের মধ্যে বসবাস করছে। জেলার গোদাগাড়ী, পবা, চারঘাট ও বাঘা উপজেলার চরাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক মানুষ এরই মধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল আলম জানান, কয়েক যুগ আগের টি বাঁধটি প্রবল স্রোতে কিছুটা দেবে গেছে। জিও ব্যাগ ফেলে রক্ষার চেষ্টা চলছে। বুধবার দুপুরে বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ১৮.১৮ মিটার পানি বয়ে যায়।
মহানগরীর পঞ্চবটি, শেখের চক, শ্রীরামপুর থেকে পঞ্চবটির বিভিন্ন এলাকা ডুবে গেছে। নদীর ধারে বসবাসকারী কয়েকশ পরিবার এখন পানিবন্দি। এছাড়াও পদ্মার ওপারে সীমান্তবর্তী চর মাঝাড়দিয়াড়, চর আষাড়িয়াদহ, চর খানপুর, বাঘার বিভিন্ন চর ডুবে গেছে।
ভারতের বিহার ও উত্তর প্রদেশ থেকে আসা ঢলে পদ্মায় বেড়েই চলেছে পানি। ফারাক্কার সবগুলো গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। প্রতি মুহূর্তেই পানি বাড়তে থাকায় বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন পদ্মা পারের মানুষ।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী বলেন, পদ্মার পানি বাড়লেও আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। তবে জেলার গোদাগাড়ী, পবা, বাঘা ও চারঘাট উপজেলার চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব চরে বন্যায় ক্ষতি হওয়ার আশংকা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, জেলার চারটি উপজেলার চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চর থেকে সরিয়ে নেওয়া মানুষকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।