Saturday 07 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বানৌজা তিতুমীর’কে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড দিলেন রাষ্ট্রপতি


২ অক্টোবর ২০১৯ ১৬:৪৪ | আপডেট: ২ অক্টোবর ২০১৯ ২২:৪৩
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রশিক্ষণ, অপারেশনাল ও লজিস্টিকস কাজে অনন্য সহায়তা প্রদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি বানৌজা তিতুমীর’কে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড সম্মাননা প্রদান করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

বুধবার (২ অক্টোবর) খুলনায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।

ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে মহামান্য রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে, মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনায় একটি আধুনিক নৌবাহিনী গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু ভারত ও যুগোস্লাভিয়া থেকে বেশ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ সংগ্রহ করেন এবং দেশের সমুদ্রসীমা নির্ধারণের লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে দ্য টেরিটরিয়াল ওয়াটার্স এন্ড মেরিটাইম জোন্স অ্যাক্ট প্রণয়ন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরি শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণের পর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আধুনিকায়নে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। বর্তমান সরকারের সামগ্রিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে নৌবহরে সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, নৌবাহিনীর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নৌঘাঁটি কমিশন লাভ করেছে। এছাড়া সমুদ্রে নজরদারি ও টহল জোরদার করতে আরও দুটি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট ক্রয় করা হয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে পটুয়াখালীতে এভিয়েশন সুবিধাসম্বলিত নৌবাহিনীর সর্ববৃহৎ নৌঘাঁটি শের-ই-বাংলা নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে।

তিনি বলেন, যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে প্রজন্মের নৌ সদস্যগণ মহান দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ সমুদ্রে নৌবহরের প্রশিক্ষণ ও লজিস্টিকস সহায়তা প্রদান করছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান নৌঘাঁটি বানৌজা তিতুমীর। দীর্ঘ ৪৪ বছর যাবত প্রশাসনিক, লজিস্টিকস সহযোগিতাসহ নৌ-সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা অর্জনে প্রশিক্ষণ প্রদানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এই ঘাঁটি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নবীন নাবিক সৃষ্টির দক্ষ সূতিকাগার হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করেছে এই ঘাঁটি। এর অধীনে পরিচালিত নবীন নাবিক প্রশিক্ষণ বিদ্যালয় এবং নেভাল প্রভোস্ট এন্ড রেগুলেটিং স্কুল নাবিকদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। এর পাশাপাশি সরবরাহ শাখার কর্মকর্তা ও নাবিকদের মৌলিক প্রশিক্ষণ প্রদান করছে স্কুল অব লজিস্টিকস এন্ড ম্যানেজম্যান্ট (সোলাম)।

রাষ্ট্রপতি বলেন, নৌবাহিনীর নিজস্ব প্রয়োজন ছাড়াও এই ঘাঁটি দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে সরকারের দিকনির্দেশনায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পালন করছে। দেশ গঠনমূলক কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ বানৌজা তিতুমীরকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করার এই মাহেন্দ্রক্ষণ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে।

তিনি বানৌজা তিতুমীরের এই অনন্য কৃতিত্বের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, নাবিক ও কর্মচারীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

উল্লেখ্য, ১৮৩২ সালে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সর্বপ্রথম বাঁশের কেল্লার মাধ্যমে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলে শহীদ হন সৈয়দ মীর নিসার আলী তিতুমীর। পরবর্তীতে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই ঘাঁটির নামকরণ করা হয় ‘বানৌজা তিতুমীর’। ১৯৭৪ সালের ১০ই ডিসেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তিতুমীর এর নামে এই ঘাঁটি কমিশন করেন এবং ‘নেভাল এনসাইন’ প্রদান করেন। যাত্রা শুরুর পর থেকে এই ঘাঁটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ, অপারেশনাল ও লজিস্টিকস কাজে অনন্য সহায়তা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।

বানৌজা তিতুমীর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর